সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এস কে সিনহা) অধস্তন আদালতের বিচারকদের জন্য একটি শৃঙ্খলাবিধি তৈরি করে তা সরকারের কাছে পাঠান। শৃঙ্খলাবিধিতে বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতির ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের হাতে রাখার প্রস্তাব ছিল। এই প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে এস কে সিনহার দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের রাজনৈতিক কৌশলের কাছে এস কে সিনহা হার মানেন এবং দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। এর পরপরই অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে।
আইনজীবীরা মনে করছেন, অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতির ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের হাতে থাকলে বিচার বিভাগ সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হতে পারত। এতে বিচার প্রার্থীরা উপকৃত হতেন।
এই বিষয়ে আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, “এখনকার সময়ে অনেকেই চাঞ্চল্যকর মামলা করে সংবাদমাধ্যমে নিজেদের প্রচারের চেষ্টা করেন। এই লোভ সংবরণ করা প্রয়োজন। বিচার বিভাগকে এমনভাবে পরিচালিত করা উচিত যাতে কোনো লোভ, লালসা, বা ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রশাসন প্রভাবিত করতে না পারে।”
সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, “বিচার বিভাগ কাগজে-কলমে স্বাধীন হলেও কার্যত তা স্বাধীনতা ভোগ করতে পারছে না। এর প্রধান কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক প্রভাব। বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে এমন কোনো সুযোগ থাকার কথা নয়।”
প্রবীণ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, “দুর্নীতিমুক্ত বিচার ব্যবস্থা গড়তে বিচারকদের ন্যায় বিচারে মনোযোগী হতে হবে। বিচার বিভাগের ভেতরে দুর্নীতি থাকলে দেশ থেকে কেউই দুর্নীতি নির্মূল করতে পারবে না। আমি এই সরকারকে অনুরোধ করবো, কিছু পারেন বা না পারেন, আমাদের গণতন্ত্রকে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা দিয়ে যান। নতুবা দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল সম্ভব নয়।”
তিনি আরও বলেন, “বিচারকদের উচিত সামাজিক অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলা এবং নিজেদের নৈতিকতার প্রতি আরও সচেতন হওয়া।”