গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সঙ্গে সঙ্গেই আত্মগোপনে চলে যান পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি), ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারসহ বাহিনীর বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। আতঙ্কে গা ঢাকা দেন থানার অন্যান্য দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরাও। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আগে নতুন আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয় এবং পুলিশের কার্যক্রম সচল করতে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সরকারের পতনের এক মাস পরেও পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারেনি পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ এখনো টহল ও অন্যান্য দৈনন্দিন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। এর ফলে ছিনতাই, খুন ও চুরির মতো অপরাধের ঘটনা ঘটছে। থানার কার্যক্রম চালু হলেও নাগরিক সেবা পুরোপুরি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এছাড়া ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায়ও বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে, যার ফলে যানজট ও ভোগান্তি বেড়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে পুলিশকে সরাসরি মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছিল, যার ফলে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায়। ৫ আগস্টের ঘটনার পর পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়ে এবং অনেক সদস্য দায়িত্ব থেকে সরে যান। নতুন আইজিপি দায়িত্ব নেওয়ার পরও পুলিশের সদস্যরা এখনো আতঙ্কে আছেন এবং ইউনিফর্ম পরিবর্তন করেই দায়িত্ব পালন করছেন।
৫ আগস্টের ঘটনায় সারাদেশে প্রায় সাড়ে ৪শ থানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৫,৮২৯টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল গোলাবারুদ লুট হয়েছে। এই অবস্থায় পুলিশের মনোবল পুনরুদ্ধারে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও আগের অবস্থায় ফিরতে আরও সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে পুলিশের মুখপাত্র ইনামুল হক সাগর জানান, পুলিশের কার্যক্রম শুরু হলেও তা পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে আরও কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।