সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বন্যা না থাকলেও আবারও চালের দাম বেড়েছে। গত ১০ দিনের ব্যবধানে ৫০ কেজির প্রতি বস্তায় চালের দাম ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে বন্যায় ত্রাণ হিসেবে চাহিদা বাড়ায় মোটা চালের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। একইসঙ্গে, দেশের উত্তর এবং দক্ষিণাঞ্চলের মোকামগুলোতে ধান ও চাল মজুত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে।
ব্যবসায়ীরা জানান, সাম্প্রতিক বন্যায় কিছু ধানের মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষকরা কিছুদিন পরেই আউশ ধান ঘরে তোলার কথা থাকলেও বন্যার কারণে ধানের ক্ষতি হয়েছে, যা চালের দামে প্রভাব ফেলেছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশে আউশ ধানের চাষ তেমন হয় না, এবং ধান নষ্টের প্রভাব চালের দামে এত দ্রুত পড়ার কথা নয়।
ভোক্তাদের মতে, চট্টগ্রাম ও আশপাশের বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ হিসেবে মোটা চালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা চালের দাম কেজিপ্রতি ২ থেকে ৪ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের চাক্তাই চালপট্টি ও পাহাড়তলী বাজারে ঘুরে দেখা যায়, চট্টগ্রামে চালের কোনো মোকাম না থাকলেও পাহাড়তলী বাজারের ২০০ গুদামে প্রতিদিন ১০০ ট্রাক বোঝাই দেড় হাজার টন এবং চাক্তাই বাজারের ১০০ গুদামে ১ হাজার ৩০০ টন চাল আসছে। গত ২০ আগস্ট পর্যন্ত সাধারণ মানের মোটা সিদ্ধ চালের ৫০ কেজির প্রতি বস্তার দাম ছিল ২ হাজার টাকা, যা বর্তমানে বেড়ে ২ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম পাহাড়তলী ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মো. জাফর আলম চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে এলসি খোলার পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে সংকট দেখা দিলে বা দাম বাড়লে সহজেই আমদানি করা যায়। পাশাপাশি, মনিটরিং বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।
অন্যদিকে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ আবদুচ ছোবহান জানিয়েছেন, এখনই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ধানের প্রভাব বাজারে পড়ার সম্ভাবনা নেই। দেশের বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্ত বীজতলা পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।