মিয়ানমারে সাম্প্রতিক সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটি ক্রমাগত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সক্রিয়তায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। এর ফলে দেশটির জনগণের জীবনযাত্রা ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) সিএনএনের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, সেনা অভ্যুত্থানের তিন বছর পর মিয়ানমারের পরিস্থিতি এতটাই নাজুক হয়ে পড়েছে যে প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা দারিদ্র্যের কবলে পড়েছে। জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) মতে, ২০১৭ সালের পর থেকে দেশটির দারিদ্র্যের হার দ্বিগুণ হয়েছে। চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটের ফলে অনেকেই বেঁচে থাকার তাগিদে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। যদিও এই প্রক্রিয়া আইনসিদ্ধ নয়, তবুও এজেন্টদের মাধ্যমে এটি চালু রয়েছে।
মং মং নামের এক ডেলিভারি চালক ২০২২ সালে অর্থাভাবে নিজের একটি কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন এবং ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ভারতে তার কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি হয়। একটি চীনা-বর্মী ব্যবসায়ী তার কিডনি তিন হাজার ডলারে সংগ্রহ করেন। জাতিসংঘের ২০১৯ সালের তথ্যানুসারে, মং মংয়ের কিডনি বিক্রির অর্থ মিয়ানমারের শহরের কোনো পরিবারের বার্ষিক আয়ের প্রায় দ্বিগুণ ছিল।
মং মং বলেন, “আমার জীবন দুর্বিষহ না হলে আমি এটি করতাম না। আমার একটি কিডনি আছে এবং আর হয়তো ১৫ থেকে ২০ বছর বাঁচব। তবে আমার কোনো আফসোস নেই।”
এমন পরিস্থিতির মধ্যে, মিয়ানমারে অনলাইন এজেন্টদের মাধ্যমে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেনাবেচার এই অবৈধ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। সিএনএন জানিয়েছে, তারা অন্তত তিনটি ফেসবুক গ্রুপ খুঁজে পেয়েছে যেখানে এই ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। অর্থের অভাবের কারণেই এসব কাজে জড়াচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।