বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আমন ধানের চাষিদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। ‘অ্যাগ্রি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছেন তাঁরা, যার মাধ্যমে নাবি আমন ধানের চারা বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের সাথে যুক্ত হয়েছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, শিক্ষার্থী ও কৃষি উদ্যোক্তারা।
১২ একর জমিতে চারা উৎপাদন:
বাকৃবি, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ বিভিন্ন স্থানে মোট ১২ একর জমিতে চারা উৎপাদন করা হচ্ছে, যা সাড়ে সাত শ বিঘা জমিতে রোপণ করা যাবে। প্রাথমিকভাবে বাকৃবির কৃষিতত্ত্ব বিভাগের গবেষণা মাঠে ২০০ কেজি বিনা ধান-১৭-এর বীজ বপন শুরু হয়েছে।
কৃষকদের জন্য সার, কীটনাশক ও নগদ অর্থ:
এই উদ্যোগ শুধুমাত্র বীজ উৎপাদন ও বিতরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। প্রান্তিক কৃষকদের আর্থিক সহায়তায় এক হাজারের বেশি কৃষককে সার, কীটনাশক এবং নগদ অর্থ প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে। পুরো কার্যক্রম বাস্তবায়নে ২২ লাখ টাকা প্রয়োজন, যার মধ্যে ৩-৪ লাখ টাকা ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকিটা স্পনসর, অ্যালামনাই ও কৃষি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
পরামর্শক দলের সহায়তা:
নাবি আমন ধানে রোগবালাইয়ের আশঙ্কা থাকায় শিক্ষার্থীরা একটি পরামর্শক দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। এই দলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা যুক্ত থাকবেন, যারা পুরো মৌসুমজুড়ে কৃষকদের পরামর্শ দেবেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শিক্ষকদের ভূমিকা:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মো. পারভেজ আনোয়ার শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, “বন্যা-পরবর্তী খাদ্যসংকট নিরসনে শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। শিক্ষক হিসেবে আমরা তাঁদের পরামর্শ দিয়ে এবং বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করিয়ে দিয়ে সহযোগিতা করছি।”
এই উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে এবং তাঁদের জীবিকা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।