রাজধানীর হাতিরঝিল লেক থেকে গাজী টিভির (জিটিভি) নিউজরুম এডিটর রাহনুমা সারাহর (৩২) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয় এবং রাত পৌনে ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাহনুমা সারাহর মৃত্যুর আগে, তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন যেখানে তার বন্ধু ফাহিম ফয়সালকে ট্যাগ করে কয়েকটি ছবি শেয়ার করেন। পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লেখেন, “তোমার মতো বন্ধু থাকা খুবই ভাগ্যের ব্যাপার। আশাকরি খুব শিগগিরই তোমার স্বপ্ন পূরণ করবে। আমাদের অনেক পরিকল্পনা ছিল, দুঃখের বিষয় হলো পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলাম না। আল্লাহ তোমার জীবনের সব আশা বাস্তবায়ন করুন।” পোস্টের শেষে তিনি দুটি ভালোবাসার ইমোজি জুড়ে দেন। এর এক ঘণ্টা আগে আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, “জীবন্মৃত হয়ে থাকার চাইতে মরে যাওয়াই ভালো।”
সাংবাদিক রাহনুমা সারাহ ঢাকার কল্যাণপুর এলাকায় বসবাস করতেন এবং নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার ইসলামবাগ কৃষ্ণপুর গ্রামের বখতিয়ার শিকদারের মেয়ে। তার স্বামী সায়েদ শুভ্র জানান, সাত বছর আগে ভালোবেসে তারা পরিবারকে না জানিয়ে বিবাহ করেন।
শুভ্র আরও জানান, সারাহ অফিসে যাওয়ার পর রাতে আর বাসায় ফেরেনি। পরবর্তীতে রাত ৩টার দিকে তিনি জানতে পারেন সারাহ হাতিরঝিল লেকের পানিতে ঝাঁপ দিয়েছেন। পরে ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, রাহনুমা সারাহর মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে এবং তার মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।
রাহনুমার স্বামী দাবি করেন যে তাদের মধ্যে কোনো ধরনের ঝগড়া হয়নি, তবে সম্প্রতি তার স্ত্রী বিচ্ছিন্ন হতে চাইছিলেন। তারা দুজনই কাজী অফিসে গিয়ে ডিভোর্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।