ঢাকা, ১৭ই আগষ্ট ২০২৪
শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কিছুদিন পর রাজধানীর বাড্ডায় খালাবাড়িতে এসেছিলেন মাহবুব আলম। কিন্তু সারাদেশে যখন আন্দোলন তুঙ্গে, তখন তিনি ছুটে যান গ্রামের বাড়ি শেরপুরে। আবারও যোগ দেন আন্দোলন কর্মসূচিতে। শেরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র মাহবুব আলম, যিনি আইসিটি ডিভিশনের জেলার হার্ডপাওয়ার প্রজেক্টের কো-অর্ডিনেটর হিসেবেও কাজ করতেন, ৪ আগস্ট অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে শেরপুরে পাঁচ শিক্ষার্থীর সাথে নিহত হন। মাহবুবসহ তিনজন গাড়িচাপায় এবং দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে ছিলেন আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তুষার, শারদুল আশিস সৌরভ, সবুজ হাসান, এবং মিম আক্তার।
মাহবুবের খালা এক গণমাধ্যমকে সেদিনের ঘটনার বিবরণ দিয়ে জানান, “ছেলেটা আমার কাছেই ছিল। কোটা আন্দোলনের কারণে ঢাকার পরিস্থিতি খারাপ হলে ২৩ জুলাই সে বাড়িতে চলে যায়। যাওয়ার সময় আমি বললাম, বাবা দেশের পরিস্থিতি ভালো না, তুই এখানেই আরও দুয়েক দিন থেকে যা। তখন সে বলল, না খালা, আমি থাকবো না।”
তিনি বলেন, “ওইদিনই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শুনি মাহবুবকে মেরে ফেলেছে। আমার এক ভাতিজা আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, সে দাঁড়িয়েছিল, ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি একদম ওর বুকের ওপর দিয়ে উঠায় দিছে। ওইখানেই মারা গেছে সে।”
নিহত মাহবুবের খালা আরও জানান, “স্বৈরাচারী সরকার সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে গুলির অর্ডার কেমন করে দিলো হাসিনা? কেমনে গুলি করছে এসব আমরা দেখছি। ষোল-সতেরো বছরের ছেলেগুলোকে কীভাবে মেরে ফেলা হলো, এই ছেলেগুলো মা-বাবাকে কী দিয়ে বুঝ দেওয়া যায়।”
জানা গেছে, ৪ আগস্ট বিকেলে শিক্ষার্থীদের মিছিলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধাওয়া দেন ও গুলি ছোড়েন। এ সময় শেরপুর শহরের খরমপুর এলাকায় প্রশাসনের দ্রুতগতির গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে কলেজছাত্র মাহবুব আলম নিহত হন। নিহত মাহবুবের ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিজ এলাকার কবরস্থানে দাফন করা হয়।