ঢাকা, ১৭ আগস্ট ২০২৪ – ঢাকা কলেজের সামনে ছাত্র ও হকার নিহতের মামলায় ইন্ধনদাতা হিসেবে অভিযুক্ত মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হলে, বিচারক তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আরও অনেক বড় অভিযোগ রয়েছে। তাকে আয়নাঘরের ‘জনক’, গুম-খুনের ‘মাস্টারমাইন্ড’, ফোনকল আড়িপাতা, এবং হেফাজতের ঘটনায় যৌথ অভিযানে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে আদালতে আয়নাঘরের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।
কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে জিয়াউল আহসান বলেন, “গত ৭ আগস্ট রাতে আমাকে বাসা থেকে ডিজিএফআইয়ের একটি দল নিয়ে আসে। ৮ দিন ধরে আমি আয়নাঘরে ছিলাম। আমি কোনো গুম বা খুনের সাথে জড়িত নই।”
তিনি আরও দাবি করেন যে, তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে এবং তিনি অসুস্থ। তার হার্টে ব্লকসহ অন্যান্য সমস্যা রয়েছে।
ইসরায়েলি আড়িপাতার যন্ত্র পেগাসাস সফটওয়্যার সম্পর্কে আদালতের প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, পেগাসাস বলে কিছু নেই এবং তিনি কোনো মোবাইল ট্র্যাকিং করেননি।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। পরে ৬ আগস্ট দেশ থেকে পালানোর সময় তাকে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়।
জিয়াউল আহসানের অতীত এবং বিতর্কিত কর্মকাণ্ড
১৯৭০ সালের ৪ ডিসেম্বর ঝালকাঠিতে জন্মগ্রহণ করা জিয়াউল আহসান ১৯৯১ সালের ২১ জুন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। প্রশিক্ষিত কমান্ডো ও স্কাই ডাইভার জিয়াউল তার কর্মজীবনে র্যাব, এনএসআই এবং এনটিএমসি-তে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তবে তার বিরুদ্ধে রয়েছে গুম, খুন এবং ব্যক্তিগত ফোনকল আড়িপাতাসহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ। বিশেষ করে, বিএনপি-জামায়াতের শতাধিক নেতাকর্মী গুম-খুনের ঘটনায় তার জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
২০১৪ সালের নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের নেপথ্যেও তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছিল, যদিও সে সময় তৎকালীন সরকারের আস্থাভাজন হওয়ায় তিনি সুরক্ষিত ছিলেন।
অবশেষে, তার বিরুদ্ধে এতদিনের সকল অভিযোগ তদন্তের মুখে পড়েছে এবং তাকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।