চলতি মাসের শুরুতে বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের মুখে সরকারের পতনের পর ক্রীড়াঙ্গনে চলছে পরিবর্তনের ঢেউ। এরই মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে সাবেক যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের অনুপস্থিতি। তিনি কোথায় আছেন, তা নিয়ে বিসিবির অভ্যন্তরে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। বিসিবির পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনও জানিয়েছেন, তারও এই ব্যাপারে কোনো ধারণা নেই।
সরকারের বিদায়ের দিন থেকেই আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী ও এমপি নিখোঁজ রয়েছেন। সেই তালিকায় নাজমুল হাসান পাপনের নামও রয়েছে। তিনি দেশে আছেন, নাকি বাইরে, এ নিয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। তার অনুপস্থিতিতে বিসিবি অভিভাবকহীন অবস্থায় পড়েছে এবং বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে হিমশিম খাচ্ছে।
মঙ্গলবার ঐতিহ্যবাহী আবাহনী ক্লাবে সাম্প্রতিক লুটতরাজ ও ভাঙচুরের পরবর্তী পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান সুজন। সেখানে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে পাপনের বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন আবাহনী ক্রিকেট দলের কোচ। সুজন জানান, “না, উনার সাথে আমার এখনও কোনো যোগাযোগ হয়নি। আমি জানিও না উনি এখন কোথায় আছেন। সুতরাং বলতে পারব না (তিনি কোথায় আছেন)। আমার সাথে যদি যোগাযোগ হয়, তাহলে কথা বলতে হবে।”
জুলাই ও আগস্ট মাসে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় আসন্ন নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। ইতোমধ্যে কয়েকটি দেশ বাংলাদেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ অবস্থায়, আইসিসি বিকল্প আয়োজক দেশ হিসেবে দুটি দেশকে বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে।
এই সংকটময় পরিস্থিতিতে সুজন জানান, বিসিবি এ বিষয়ে এখন আর কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। “এখন তো পাপন ভাই এখানে নেই, যদিও এখনও উনিই সভাপতি আছেন, যেহেতু তিনি পদত্যাগ করেননি। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা হিসেবে আসিফ মাহমুদ এসেছেন। উনিই সিদ্ধান্ত নেবেন। কারণ এটা এখন আর আমাদের হাতে নেই, বিসিবির হাতে নেই। বিশ্বকাপটা বাংলাদেশে হবে কিনা, সেটা এখন সরকারি পর্যায়ে চলে গেছে।”
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে আবাহনী লিমিটেড একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছেলে শেখ কামালের হাত ধরে ক্লাবটির যাত্রা শুরু হয়েছিল। তবে সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেমন হামলা ও লুটপাট চলছে, তেমনি ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটিও আক্রান্ত হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সুজনের আহ্বান, “খেলার সাথে যেন রাজনীতি না মেশানো হয়। এমন তো না যে দেশে নতুন করে একটা পট পরিবর্তন হয়েছে। এর আগেও তো এমনটা হয়েছে। মোহামমেডান বলতে বিএনপি বোঝায়, আর আবাহনী মানে আওয়ামী লীগ বোঝায়। আওয়ামী লীগের আমলে কী মোহামেডান ফুটবল, ক্রিকেট খেলেনি? এটা তো ঠিক না। আমি মনে করি খেলার মধ্যে রাজনীতি নিয়ে ওভাবে চিন্তা করাটা ঠিক না।”