ঢাকা, ১৩ আগস্ট ২০২৪: প্রায় দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়েছে বিদেশি ঋণ পরিশোধ। বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়ে অস্থিরতার কারণে গত দুই সপ্তাহ ধরে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশের ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বন্ধ ছিল। গতকাল সোমবার দুপুরে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে নতুন করে ঋণ পরিশোধের নির্দেশনা দেওয়ার পর এই প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু হয় বলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে।
ইআরডি সূত্র মতে, নতুন নির্দেশনার মাধ্যমে বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল, এবং জ্বালানি তেল ও সারের বিল পরিশোধ আবার নিয়মিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশকে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন কোটি ডলার ঋণ ও বিল পরিশোধ করতে হয়।
এ বিষয়ে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান জানান, ঋণ পরিশোধ বন্ধ থাকায় দেশের ভাবমূর্তি সংকটে পড়েছে। এই ধরনের পরিস্থিতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি বলেন, “পেমেন্ট গেটওয়ে সব সময় চালু রাখা উচিত। ঋণ পরিশোধ বন্ধ রাখা হলে তার কারণ খুঁজে বের করা জরুরি।”
বর্তমানে বিদেশি সহায়তাপুষ্ট ৩০০-এর বেশি প্রকল্প রয়েছে, যার বেশিরভাগের ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়নি। কিন্তু সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে। এছাড়া প্রায় ৭০০ প্রকল্পের সুদ ও আসল নিয়মিত পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে।
গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়ে বন্ধ থাকায়, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর সহিংসতা ও সরকার পতনের ঘটনায় এই সমস্যা তৈরি হয়। ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশকে প্রতিদিন গড়ে এক কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হয়, অন্যদিকে জ্বালানি তেল ও সারের বিল পরিশোধ করতে হয় দৈনিক আড়াই কোটি ডলার।
গত এক দশকে বিদেশি ঋণ পরিশোধের পরিমাণ তিন গুণ বেড়েছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১১০ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করা হলেও, ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে ৩৩৬ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে।
দেশের জন্য বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ আরও বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।