ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) সম্প্রতি বড় ধরনের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে জর্জরিত হয়েছে। ব্যাংকটির বিরুদ্ধে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে যোগসাজশে দুর্বল ও কাগুজে কোম্পানিকে বিপুল অঙ্কের ঋণ প্রদান এবং ঋণের পরিশোধের সময়সীমা বারবার বাড়ানোর মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
একটি বিশেষ ঘটনা তুলে ধরলে দেখা যায়, আরামিত লিমিটেডের প্রটোকল অফিসার মোহাম্মদ ফরমান উল্লাহ, যিনি মাসে মাত্র ২০ হাজার টাকা আয় করেন, তার নামে ইউসিবি ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকার ঋণ থাকার বিষয়টি জানতে পেরে হতভম্ব হন। তদন্তে জানা যায়, ভিশন ট্রেডিং নামে একটি কোম্পানিকে এ ঋণ প্রদান করা হয়েছিল, যার মালিকানা কাগজপত্রে ফরমানের নামে রয়েছে। ব্যাংকটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা কেবলমাত্র কাগজে-কলমে থাকা এসব কোম্পানিকে ঋণ দিয়েছে, যার অনেকটাই এখন অপরিশোধিত রয়েছে।
ইউসিবি ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখার বিরুদ্ধে ৪০০ কোটি টাকার ঋণ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা ৬০০ কোটি টাকা মূল্যের একটি নদী ড্রেজিং প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিল। এই প্রকল্পটি সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা ও সরঞ্জামের অভাবে শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে যায়। এছাড়া ব্যাংকিং নিয়ম ভেঙে এই ঋণের ৭০ শতাংশ অগ্রিম ছেড়ে দেওয়া হয়, যা ব্যাংকের ঋণ প্রক্রিয়ার উপর প্রশ্ন তুলেছে।
উল্লেখ্য, ইউসিবি ব্যাংকটি দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী ও পারিবারিক সংযোগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ব্যাংকটির ঋণ বিতরণের প্রক্রিয়া এবং ঋণের যথাযথ পরিশোধ না হওয়া সত্ত্বেও সময়সীমা বাড়ানোর অনিয়মিত প্রবণতা এর আর্থিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
ব্যাংকটির চেয়ারপারসন পরিবর্তন হলেও, নেতৃত্বের পরিবর্তন এবং আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি সত্ত্বেও ব্যাংকটির আর্থিক অব্যবস্থাপনার ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ব্যাংকটির আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে এখন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে সংশ্লিষ্ট মহল।