বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত নাম বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তার নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়। ২০১৫ সালে অবসর নেওয়ার পরও তিনি বিভিন্ন কারণে আলোচনায় ছিলেন। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের রায়ের বেঞ্চে তিনি একমাত্র বিচারক ছিলেন যিনি সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন।
বিচারপতি মানিকের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের তালিকায় রয়েছে ১৬১টি মামলার রায় লেখার কাজ অবসর নেওয়ার পরও অসম্পূর্ণ থাকা। এ নিয়ে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে তার দ্বন্দ্বও ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি বিভিন্ন মামলায় বিতর্কিত রায় দেন, যা তাকে প্রায় সব সময়ই আলোচনায় রাখে। এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালেও টকশোতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে সমালোচিত হন।
বিচারপতি মানিকের বিচারপতি নিয়োগেও রয়েছে বিতর্ক। অভিযোগ রয়েছে, ২১ জন বিচারককে উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা তাকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। এছাড়া এক ট্রাফিক সার্জেন্টকে সালাম না দেওয়ার কারণে আদালতে কান ধরে উঠবস করানোর ঘটনাও রয়েছে তার নামের সাথে। পুলিশ মহাপরিদর্শক শহীদুল হক এই ঘটনায় আপত্তি জানান, যার ফলে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়।
বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে আরও রয়েছে বিমানে ইকোনমি ক্লাসের টিকিট নিয়ে বিজনেস ক্লাসে বসে লন্ডনে যাওয়া এবং লন্ডনে ৩২ হাজার পাউন্ড দিয়ে তিনটি বাড়ি কেনার অভিযোগ। এই সম্পদের উৎস এবং ট্যাক্স রেকর্ড সম্পর্কে তিনি কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি। এছাড়া, মানি লন্ডারিং, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় আইন ভঙ্গ, এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের শপথ ও আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগও তার বিরুদ্ধে উঠেছিল।