বন্যাকবলিত এলাকা এবং সংকটময় পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসা একটি মহৎ উদ্যোগ হিসেবে দেখা যায়। প্রতি বছর বন্যার সময় বিভিন্ন কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা তাদের প্রচার এবং প্রভাবের মাধ্যমে মানুষের কাছে সাহায্যের আবেদন করে। তারা বিকাশ, নগদ, বা ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করতে চায়। তবে, সাম্প্রতিক ফেনীর ভয়াবহ বন্যায় দেখা যাচ্ছে যে, এইবার অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর এগিয়ে আসেননি, যা নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের ভূমিকা এবং দ্বৈত আচরণ
সাধারণত, যখনই কোনো আর্থিক সংকট বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আসে, অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মানবতার দোহাই দিয়ে অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়। এই প্রক্রিয়ায় তারা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রচারণা চালিয়ে দানশীল মানুষদের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন করে। তবে, ফেনীর এই বন্যায় আমরা দেখতে পাইনি সেই প্রচারণা বা সক্রিয়তা যা পূর্বের বছরগুলোতে অন্যান্য বন্যার সময় দেখা গেছে।
ফেনীতে যে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে, তা মানুষের জীবনযাত্রাকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। ঘরবাড়ি, সম্পদ, এবং জীবিকা হারিয়ে ফেনীর মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। কিন্তু, এই কঠিন সময়ে আমরা দেখি, অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর যাদের আমরা আগে সক্রিয়ভাবে দেখেছি সাহায্যের জন্য, তারা এবার নিশ্চুপ থেকেছেন। এটি সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের হতাশা এবং সন্দেহ তৈরি করেছে। মানুষ প্রশ্ন তুলছে, কেন তারা এবার এগিয়ে আসেননি? তাদের নীরবতার কারণ কি শুধুই আর্থিক অনাগ্রহ, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে?
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের অবস্থান
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের অবস্থান সম্পর্কেও প্রশ্ন উঠেছে। এই আন্দোলনটি অনেক মানুষকে আকৃষ্ট করেছে, কিন্তু একইসাথে এটি নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। আন্দোলনের সময় অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর তাদের অনুসারীদের নিরপেক্ষতা বা পক্ষপাতিত্বের মাধ্যমে প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। বিশেষ করে, প্রাক্তন সরকারের পুলিশের গুলিতে যারা মারা গেছেন, তাদের জন্যেও কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য বা সংহতির বার্তা আমরা অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটরের থেকে পাইনি। এর ফলে, সাধারণ মানুষ তাদের উপর থেকে আস্থা হারিয়েছে এবং তাদের কার্যকলাপের পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছে।
আর্থিক সুযোগ এবং সঠিক ব্যবহারের প্রশ্ন
যখনই কোনো আর্থিক সংকট বা দুর্যোগ আসে, অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর সক্রিয়ভাবে মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে শুরু করে। তারা তাদের প্রচারণায় মানবতার দোহাই দিয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে সাহায্য করতে। কিন্তু, সেই অর্থ কি সঠিকভাবে খরচ হচ্ছে, তা নিয়ে যথেষ্ট স্বচ্ছতা নেই। অনেকেই অভিযোগ করেন, তারা যাদের কাছে টাকা দিয়েছেন, তারা পরে সেগুলোর হিসাব দেন না। এর ফলে মানুষ আরো সন্দিহান হয়ে উঠছে এবং তাদের অর্থ সাহায্য দেয়ার ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত হচ্ছে।
উল্লেখযোগ্য কিছু কনটেন্ট ক্রিয়েটর যেমন তৌহিদ আফ্রিদি, তাসরিফ, ব্যরিস্টার সুমন, এবং ফারাজ করিম চৌধুরী বিভিন্ন সময়ে বন্যা বা সংকটময় পরিস্থিতিতে সাহায্যের আবেদন করেছেন। তারা মানুষের কাছ থেকে বিশাল পরিমাণে অর্থ সংগ্রহ করেছেন। তবে, এই অর্থের সঠিক ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কোনো হিসাব বা তথ্য না থাকার কারণে সাধারণ মানুষ জানতে পারে না, তাদের দেওয়া অর্থ কোথায় এবং কিভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে, এই কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের প্রতি মানুষের আস্থা ক্রমশ