নোয়াখালী: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলায় খালাস দিয়েছে নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। বুধবার (২১ আগস্ট) আদালতের বিচারক মো. নোমান মহি উদ্দিন এই রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের পরিদর্শক মো. শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানাও বাতিল করে তা ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এই নির্দেশনা অনুসারে চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) গ্রেফতারি পরোয়ানা ফেরত পাঠানোর আদেশও দেওয়া হয়েছে।
মামলার পটভূমি
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দেন তারেক রহমান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চরজব্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক বাদী হয়ে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগ অনুসারে, আদালত চরজব্বর থানাকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন এবং পরে ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন ভূঁঞা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এই মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছিল।
আদালতের রায়
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বুধবার আদালত তারেক রহমানকে খালাস প্রদান করেন। এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) দেবব্রত চক্রবর্তী ছিলেন। অন্যদিকে, তারেক রহমানের পক্ষে ছিলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া এবং কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগ) অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান পলাশ।
প্রতিক্রিয়া
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। গত রবিবার (১৮ আগস্ট) সুবর্ণচরে বিএনপির নেতাকর্মীরা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেন। সেই সঙ্গে মামলাটি প্রত্যাহার এবং বাদী অ্যাডভোকেট ওমর ফারুককে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
এই মামলাটি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া বেশ কয়েকটি মামলার মধ্যে একটি। তারেক রহমান বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন এবং সেখান থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। আদালতের এই রায় তারেক রহমানের জন্য একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সন্তোষ প্রকাশের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।