কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা, ইন্টারনেট বন্ধ এবং টানা তিন দিনের সাধারণ ছুটির কারণে প্রবাসী আয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ের চতুর্থ সপ্তাহে (২১ থেকে ২৭ জুলাই) দেশে এসেছে মাত্র ১৩৮ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স। তৃতীয় সপ্তাহে (১৪ থেকে ২০ জুলাই) ৪৫০ মিলিয়ন ডলার, দ্বিতীয় সপ্তাহে (৭ থেকে ১৩ জুলাই) ৬০৮ মিলিয়ন ডলার এবং প্রথম সপ্তাহে (১ থেকে ৬ জুলাই) ৩৭০ মিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স দেশে আসে।
জুলাইয়ের ২৭ দিনে মোট রেমিটেন্স এসেছে ১ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার, যা গতবছরের জুলাই মাসের ১ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে কম। গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ২ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল, যা ছিল ৪৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল।
কোটা আন্দোলনের সহিংসতায় জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করে। ১৮ জুলাই সংঘাত মারাত্মক রূপ নিলে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। ১৯ জুলাই শুক্রবার মধ্যরাত থেকে কারফিউ জারি হলে সারা দেশে সেনা নামানো হয় এবং কল কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। সরকার রবি থেকে মঙ্গল (২১ থেকে ২৩ জুলাই) নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করলে সব অফিস, আদালত, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে।
ইন্টারনেট ফিরে আসা এবং কারফিউ শিথিল হওয়ার পর ২৪ জুলাই থেকে সীমিত পরিসরে ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়। ব্যাংকাররা জানান, ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে ২৩ তারিখ পর্যন্ত রেমিটেন্স আসা বন্ধ ছিল। ২৪ ও ২৫ জুলাই সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং কার্যক্রম চললেও রেমিটেন্স এসেছে খুবই কম।
অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা মনে করেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে আমদানি-রপ্তানির মত রেমিটেন্সের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।