ডেস্ক রিপোর্ট │ সকলের কণ্ঠ
ফিলিস্তিনের গাজায় দীর্ঘদিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা। ফলে চুক্তি অনুমোদনের ২৪ ঘণ্টা পর শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোর থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে যাচ্ছে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (X) এক পোস্টে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। পোস্টে তিনি বলেন, “ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি সংক্রান্ত ফ্রেমওয়ার্কটি এই মাত্র অনুমোদন করল সরকার।”
চুক্তি অনুমোদনের আগে এক সংসদীয় বৈঠকে নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয়ের জন্যই শান্তির নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
অন্যদিকে হামাসের নির্বাসিত গাজা প্রধান খলিল আল–হাইয়া জানিয়েছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর কাছ থেকে নিশ্চিত আশ্বাস পেয়েছেন যে, এই যুদ্ধের অবসান ঘটেছে।
এদিকে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির বাস্তবায়ন ও তদারকির জন্য ইসরায়েলে ২০০ মার্কিন সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর (পেন্টাগন)। জানানো হয়েছে, এই সেনারা মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের অধীনে কাজ করবে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, নতুনভাবে গঠিত এই টাস্কফোর্সের নাম ‘সিভিল–মিলিটারি কো–অর্ডিনেশন সেন্টার (CMCC)’। এর দায়িত্ব হবে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অগ্রগতি তদারকি করা এবং মানবিক সহায়তার প্রবাহ নিশ্চিত করা।
অফিসিয়াল সূত্র জানিয়েছে, মার্কিন সেনারা ইসরায়েল সীমান্তে অবস্থান করলেও তারা গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করবে না। তাদের কাজ হবে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মানবিক সহায়তা, নিরাপত্তা সমন্বয় ও অবকাঠামো পুনর্গঠনে সহযোগিতা করা।
এই টাস্কফোর্সে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি মিশর, কাতার ও তুরস্কের সেনা প্রতিনিধি থাকবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)-ও এই শান্তি উদ্যোগে যোগ দিতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির পথে একটি বড় অগ্রগতি হতে পারে। তবে এই যুদ্ধবিরতি কতটা টেকসই হবে, তা নির্ভর করবে উভয় পক্ষের প্রতিশ্রুতি ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকার ওপর।