ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
বাংলাদেশের জাতীয় দারিদ্র্যের হার ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেড়ে ২১ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি জানায়, আগের অর্থবছরে (২০২৩-২৪) এই হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অফিসে আয়োজিত “বাংলাদেশ আপডেট” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ৬০.৯ শতাংশ থেকে কমে ৫৮.৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর প্রধান কারণ হিসেবে নারীদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ হ্রাসকে দায়ী করা হয়েছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, একই সময়ে প্রায় ৩০ লাখ কর্মক্ষম বয়সী মানুষ শ্রমশক্তির বাইরে ছিলেন, যার মধ্যে ২৪ লাখই নারী। এ সময়ে মোট কর্মসংস্থান প্রায় ২০ লাখ কমে ৬৯.১ লাখে দাঁড়িয়েছে। ফলে কর্মসংস্থান-থেকে-কর্মক্ষম-বয়স জনসংখ্যার অনুপাত ২.১ শতাংশ পয়েন্ট কমে ৫৬.৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ৪.২ শতাংশ। তবে ২০২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.৮ শতাংশে এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৬.৩ শতাংশে উন্নীত হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মারাত্মক ব্যাঘাতের পরেও পরবর্তী প্রান্তিকগুলোতে প্রবৃদ্ধি কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে। বহিরাগত খাতের চাপ কমেছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল হয়েছে এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপও কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
তবে এখনো উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। তাদের মতে, বেসরকারি বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি তীব্রভাবে ধীর হয়ে গেছে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি স্থবির অবস্থায় আছে এবং ব্যাংকিং খাত অনাদায়ী ঋণের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি রাজস্ব আদায় দুর্বল ও সরকারি বিনিয়োগও কমেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দুর্বল বেসরকারি বিনিয়োগ ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে প্রবৃদ্ধির গতি কমে গেছে। বিনিয়োগ মাত্র ০.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ব্যয় এবং মূলধনি পণ্যের আমদানি যথাক্রমে ২৫.৫ ও ১০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
তবে রপ্তানি খাতে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে এবং শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ভোগব্যয়কে সমর্থন করছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।