ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বেরেলি জেলায় ‘আই লাভ মোহাম্মদ’ আন্দোলন ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় বাহিনী মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর নির্বিচার হামলা ও দমন অভিযান চালিয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং ৮০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এছাড়া ৩৮টি দোকান সিলগালা করা হয়েছে এবং মুসলিম মালিকানাধীন বহু দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখল করে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বেরেলির সিটি কোটওয়ালি থানার বাইরে অসংখ্য পরিবার এখনো প্রিয়জনদের খোঁজে অপেক্ষা করছে। তাদের অভিযোগ, পুলিশ নির্বিচারে সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে এবং দেখা করতে দিচ্ছে না।
ভুক্তভোগী এক মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
“গত শুক্রবার আমার ছেলে দুধ কিনতে বের হয়েছিল। রাত ৮টার দিকে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। এখন চার দিনের বেশি হয়ে গেছে, কিন্তু আমরা তার কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। আমি প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থানার সামনে দাঁড়িয়ে থাকি, কেউ ছেলের খবর দেয় না।”
পরিবারগুলোর দাবি, যাদের আটক করা হয়েছে, তারা কোনো সহিংসতায় জড়িত ছিলেন না।
বেরেলির এসএসপি অনুরাগ আর্য জানিয়েছেন,
“সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০টি এফআইআর হয়েছে, ৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, শুক্রবার দুপুর ৩টা থেকে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়, যা দুই দিন পর শনিবার বিকেল ৩টার দিকে পুনরায় চালু করা হয়েছে।
সহিংসতার আশঙ্কায় জুমার নামাজের আগে বেরেলি শহরে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং ড্রোনের মাধ্যমে পুরো এলাকায় নজরদারি চালানো হয়।
এদিকে, উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়া রোধে ভিম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ ও কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদকে সাহারানপুরে গৃহবন্দি রাখা হয়েছে, যাতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে যেতে না পারেন।
স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে, রাষ্ট্রীয় বাহিনী মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে লক্ষ্যভিত্তিক অভিযান চালাচ্ছে, যা ভারতের ধর্মীয় সম্প্রীতির ওপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।