দুই সপ্তাহ আগে হাসিখুশি মেজাজে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন শাফিন আহমেদ। সেখানে গান গেয়ে শ্রোতাদের মাতানোর পরিকল্পনা ছিল তাঁর। কিন্তু সব পরিকল্পনা থামিয়ে আজ সোমবার কফিনে মোড়া অবস্থায় ঢাকায় ফিরলেন শাফিন। বড় ভাই ও মাইলস ব্যান্ডের সদস্য হামিন আহমেদ তাঁর মরদেহ গ্রহণ করেন।
শাফিনের মরদেহ তাঁর স্ত্রী রুমানা দৌলা যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। বাংলাদেশ সময় গতকাল রোববার শাফিনকে বহনকারী উড়োজাহাজ দুবাই হয়ে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় মরদেহ গ্রহণ করেন হামিন আহমেদ ও পরিবারের সদস্যরা।
হামিন আহমেদ জানান, শাফিনের মরদেহ রাতে গুলশানে থাকবে। কাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় মরদেহ গুলশান আজাদ মসজিদে নিয়ে যাওয়া হবে। বাদ জোহর জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে বাবার কবরে শাফিনকে সমাহিত করা হবে। পাশে থাকবে মা সংগীতশিল্পী ফিরোজা বেগমের কবর।
বাংলাদেশ সময় ২৫ জুলাই সকালে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাফিন আহমেদ। এরপর থেকে মরদেহ দেশে আনার প্রস্তুতি শুরু হয়। প্রথমে বড় ভাই হামিন আহমেদের যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনি যাননি।
শাফিন আহমেদ দুই সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রে উড়াল দেন। তাঁর পরিকল্পনা ছিল দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে গান গেয়ে শ্রোতাদের মাতানোর। দ্বিতীয় কনসার্টের আগে ২০ জুলাই ভার্জিনিয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি এবং গুরুতর হার্ট অ্যাটাক হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েক দিন ভেন্টিলেশনে থাকার পর গত বৃহস্পতিবার চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
শাফিন আহমেদের গাওয়া কিছু জনপ্রিয় গান হল ‘আজ জন্মদিন তোমার’, ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘জ্বালা জ্বালা জ্বালা…এ অন্তরে’, ‘ফিরিয়ে দাও হারানো প্রেম’, ‘ফিরে এলে না’, ‘হ্যালো ঢাকা’। তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন।
আশির দশকে ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে মাইলস ব্যান্ডের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। প্রথম দিকে ব্যান্ডটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের জনপ্রিয় শিল্পীদের গান করতো। ১৯৯০ সালে মাইলস বাংলা গান করার সিদ্ধান্ত নেয়। মাইলস দেশে ও বিদেশে দেড় হাজারের বেশি কনসার্ট করেছে। ২০১৭ ও ২০১৯ সালেও মাইলস দুটি বড় কনসার্টে গান পরিবেশন করে।