ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। কমেছে চাল, ডিম, সবজি ও পেঁয়াজের দাম। পাইকারি বাজারে বস্তাপ্রতি চালের দাম কমেছে প্রায় ৫০ টাকা এবং দেশীয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত নিম্নমুখী হয়েছে। তবে খুচরা বাজারে এখনও অনেক পণ্যের দাম আগের অবস্থানেই রয়ে গেছে।
কারওয়ান বাজার, নয়াবাজার ও শান্তিনগরের পাইকারি বাজার ঘুরে জানা গেছে, সরু জাতের মিনিকেট-নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৭৫–৮৫ টাকা, মাঝারি জাতের পাইজাম-আটাশ ৬০–৭৫ টাকা এবং মোটাজাতের চাল ৫৫–৬০ টাকা দরে। পাইকারি পর্যায়ে ভারতীয় নাজিরশাইল ৬৮–৭২ টাকা ও স্বর্ণা-৫ বা পাইজাম ৫২–৫৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
রনি রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মনিরুল ইসলাম জানান, “মাঝারি জাতের পাইজাম চালের দাম বস্তায় ১০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। ইন্ডিয়ান নাজিরশাইল কেজিতে ৫–৭ টাকা কমে বস্তাপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩,৭৫০ টাকায়।”
তেজগাঁও জনতা রাইস এজেন্সির সোহরাব হোসেন বলেন, “ভারত থেকে চাল আমদানির পর করপোরেট কোম্পানিগুলো বস্তাপ্রতি ৫০ টাকা করে দাম কমিয়েছে।” তবে খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দাম এখনও আগের মতোই বেশি।
ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে প্রভাব ফেললেও ক্রেতাদের আগ্রহ কম। দেশীয় পেঁয়াজ বর্তমানে কেজিতে ৭০–৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় ৫–১০ টাকা কম।
ডিমের দামও কিছুটা কমে ডজনপ্রতি ১২৫–১৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, যদিও পাড়া-মহল্লার দোকানে এখনও ১৪০–১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারে ভিন্নচিত্র। কারওয়ান বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ১০–১৫ টাকা কমে সবজি বিক্রি হলেও অন্যান্য বাজারে দাম প্রায় অপরিবর্তিত। সবজি বিক্রেতা আয়মান আহমেদ খোকন জানান, “বৃষ্টির কারণে ক্রেতা কম আসায় লোকসানে বিক্রি করছি।” তবে নয়াবাজারের হামীম বলেন, “সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম এখনও বেশি।”
বর্তমান বাজারদর (প্রতি কেজি)
- আলু: ২০–২৫ টাকা
- পেঁপে: ২৫–৩০ টাকা
- কচুর লতি: ৬০–৭০ টাকা
- বরবটি: ৬০–৭০ টাকা
- ঝিঙে: ৬০ টাকা
- টমেটো: ১০০–১২০ টাকা
- করলা: ৭০–৮০ টাকা
- বেগুন (গোল): ১০০–১২০ টাকা, (লম্বা) ৭০–৮০ টাকা
- গাজর: ১০০ টাকা
এছাড়া আমদানি করা কাঁচামরিচের দাম বেড়ে কেজিপ্রতি ১৬০–১৮০ টাকা হয়েছে।
আটা ও ময়দার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৪৫–৫২ টাকায় এবং প্যাকেট আটা ৫৫–৬৫ টাকায়। খোলা ময়দা কেজিপ্রতি ৫৫–৬৫ টাকা ও প্যাকেট ময়দা ৬৫–৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়ে ১৭০–১৮০ টাকা কেজি হয়েছে, তবে সোনালি মুরগি ২৮০–৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৭০০–৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ১,১০০–১,২০০ টাকা কেজি দরে স্থিতিশীল রয়েছে।
চালের বাজারে সামান্য নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দিলেও খুচরা পর্যায়ে তা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। পেঁয়াজ, ডিম ও কিছু সবজির দাম কমলেও অনেক পণ্যের দাম এখনও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, আমদানির প্রবাহ অব্যাহত থাকলে বাজার কিছুটা স্থিতিশীল থাকবে।