ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
দেশের মানুষ আর ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থায় ফিরতে চায় না উল্লেখ করে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) খুলনা মহানগর শাখার আয়োজনে মিছিল পূর্ব গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান।
সরকারকে উদ্দেশ করে ফয়জুল করিম বলেন, “গণভোট দিন। জনগণই নির্ধারণ করুক কিভাবে ভোট হবে।” তিনি জানান, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, ফ্যাসিবাদের বিচার, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামি সমাজভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবেই এ গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি স্মরণ করে বলেন, “চব্বিশের গণআন্দোলনের সময় বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলাম, রক্ত দিয়েছিলাম, জীবন দিয়েছিলাম। আওয়ামী লীগ দেশের বিচার ব্যবস্থা, শাসন ব্যবস্থা—সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছিল। ভেবেছিলাম ফ্যাসিবাদ উৎখাত হলে শান্তি ফিরবে, কিন্তু তা হয়নি।”
তার দাবি, বর্তমান পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে ধর্ষণ, কন্যাকে বিয়ে না দেওয়ায় পিতাকে হত্যা, ঘরবাড়ি ও সম্পদ দখল—এসব ঘটনায় মানুষের নিরাপত্তাহীনতা দিন দিন বাড়ছে।
ইসলামি আন্দোলনের এই শীর্ষ নেতা বিএনপিকেও দায়ী করেন। তিনি অভিযোগ করেন, “তারা মনে করছে ক্ষমতায় চলে গেছে। কিন্তু ‘দিল্লী দূর-অস্ত’। দেশের মানুষ আর কোনো চাঁদাবাজ, দখলবাজ, সন্ত্রাসী বা লুটপাটকারীদের ভোট দেবে না।”
তার ভাষ্য অনুযায়ী, বিএনপির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে—ধানের শীষে ভোট না দিলে ভোটাররা বাড়ি ফিরতে পারবেন না। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই যদি এ রকম হুমকি দেওয়া হয়, তাহলে ক্ষমতায় গেলে জনগণের কী হবে?”
ভোটাররা তাদের জানমালের নিরাপত্তা বিবেচনা করেই ভোট দেবেন বলে মন্তব্য করেন ফয়জুল করিম। আওয়ামী লীগের জুলুমের সময় কিছু মানুষ ভয়কে জয় করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “হাত পাখা মার্কা নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ, মুসলমান-হিন্দু, ধনী-গরিব—সব শ্রেণির মানুষের সার্বজনীন প্রতীক।”
আগামী নির্বাচনে ইসলামি আন্দোলন মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।
ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরের সিনিয়র নায়েবে আমির শেখ মো. নাসিরউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল এবং জেলা সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল ইমরান। এছাড়া কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা এবং বিভিন্ন আসনে হাতপাখা সমর্থিত প্রার্থীরাও বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য মিছিল নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেষ হয়।