ডাকসু নির্বাচন সফল, জাতীয় নির্বাচনেও থাকবে ৮০ হাজার ফোর্স: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, “আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, যেন জাহাঙ্গীরনগরের নির্বাচনটাও সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর হয়।”
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার জায়গা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন। তাই জাকসুর মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন যাতে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা ছাড়াই সম্পন্ন হয়, সেটি নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। তিনি বিশ্বাস প্রকাশ করেন, সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এবারের জাকসু নির্বাচন শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণ করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “অন্যবারের চেয়ে এবারের ডাকসু নির্বাচন অনেক ভালো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্বশীলভাবে কাজ করেছে। আগে কিছুটা সমস্যা থাকলেও বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো আছে।”
বিশ্লেষকদের মতে, ডাকসুর অভিজ্ঞতা থেকেই জাকসুর নির্বাচনকে আরও স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক প্রস্তুতির কথাও তুলে ধরেন তিনি। উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন নির্বাচনে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, আনসার ও পুলিশ মিলিয়ে প্রায় ৮০ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এর ফলে জনগণ নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পাসপোর্ট অফিস পরিদর্শনের কারণ ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, আগে পাসপোর্ট করতে দীর্ঘ সময় লাগলেও এখন তা অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। আরও দ্রুত সেবা দিতে নাগরিক সেবাকেন্দ্র খোলা হয়েছে। তার ভাষায়—
“মানুষ যাতে সহজে পাসপোর্ট পেতে পারে, এজন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনও উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
এছাড়া জনবল সংকট দূর করতে নতুন নিয়োগ ও কর্মী বৃদ্ধি করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে ডাকসু ও জাকসু নির্বাচন কেবল শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বই তৈরি করে না, জাতীয় রাজনীতিতেও প্রভাব বিস্তার করে। তাই এ ধরনের নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনের বিষয়টি জাতীয় স্বার্থের সঙ্গেও সম্পর্কিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য তরুণ সমাজকে আশ্বস্ত করবে। কারণ ছাত্র সংসদ নির্বাচন যেমন শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার চর্চার সুযোগ তৈরি করে, তেমনি জাতীয় নির্বাচনের জন্য জনগণের আস্থা অর্জনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর আহ্বান কেবল দোয়া করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এর মধ্য দিয়ে তিনি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক চর্চার প্রয়োজনীয়তাকেই তুলে ধরেছেন। জাকসু নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর করার পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচনেও ব্যাপক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করবে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।