কাঠমান্ডুর আগুনে গুরুতর দগ্ধ ঝালনাথ খানালের স্ত্রী
নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঝালনাথ খানালের স্ত্রী রাজ্যলক্ষী চিত্রকরকে নিয়ে ছড়ানো মৃত্যুর খবরটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে। দেশটির গণমাধ্যমগুলো বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সর্বশেষ আপডেটে জানিয়েছে, তিনি এখনও জীবিত আছেন। তবে তার শরীরের একটি বড় অংশ মারাত্মকভাবে দগ্ধ হওয়ায় অবস্থাকে আশঙ্কাজনক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঝালনাথ খানালের বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দিলে রাজ্যলক্ষী চিত্রকর গুরুতর আহত হন। এ ঘটনার পরপরই স্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যম তার মৃত্যু হয়েছে বলে খবর প্রচার করে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও সেই তথ্য তুলে ধরে দ্রুত ছড়িয়ে দেয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার নেপালের একাধিক নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যম ও চিকিৎসক সূত্র নিশ্চিত করেছে, তিনি এখনও চিকিৎসাধীন আছেন।
ঘটনার দিন বিক্ষোভকারীরা দালু এলাকায় অবস্থিত ঝালনাথ খানালের বাড়িতে হামলা চালায়। তাতে বাড়িটি মুহূর্তের মধ্যে আগুনে ঘিরে যায়। রাজ্যলক্ষী চিত্রকর ভেতরে আটকা পড়ে অগ্নিদগ্ধ হন। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে কাঠমান্ডুর কৃতিপুর বার্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শরীরের অধিকাংশ অংশ দগ্ধ হওয়ায় পরিস্থিতি জটিল।
কৃতিপুর বার্ন হাসপাতালের একজন চিকিৎসক গণমাধ্যমকে বলেন,
“রাজ্যলক্ষী চিত্রকর মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছেন। আমরা তাকে বাঁচানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আপাতত তিনি সংকটাপন্ন অবস্থায় নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন।”
নেপালে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ চলছে। জেন-জি প্রজন্মের নেতৃত্বে হওয়া এই আন্দোলন দ্রুত সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের দাবি করছে। মঙ্গলবার শুধু খানালের বাড়ি নয়, প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন এবং অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু প্রসাদ পুডেলের ওপরও হামলা চালানো হয়।
প্রথমে রাজ্যলক্ষী চিত্রকরের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় দেশ-বিদেশে রাজনৈতিক মহলে শোকের আবহ তৈরি হয়। এমনকি নেপালের ভেতরেও ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছিল। তবে সংশোধিত তথ্য প্রকাশের পর অনেকেই হতবাক হয়ে বলেন, এমন সংবেদনশীল পরিস্থিতিতে ভুয়া বা যাচাই-বাছাইবিহীন তথ্য প্রচার করা বিপজ্জনক।
রাজ্যলক্ষী চিত্রকরের মৃত্যুর খবরটি বিভ্রান্তিকর হলেও তার শারীরিক অবস্থা এখনও অত্যন্ত সংকটজনক। নেপালের বর্তমান রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে এই ঘটনাটি দেশটির মানুষের মধ্যে আরও ভীতি ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। চিকিৎসকরা বলছেন, আগামী কয়েকদিন তার জীবনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।