ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক ছুটির সংখ্যা কমানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানিয়েছেন, অপ্রয়োজনীয় ছুটি কমিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাঠদানের সময় বাড়ানো হবে।
রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ২০২৫ উপলক্ষে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, “আমাদের দেখতে হবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে কতটা সময় ব্যয় করা যাচ্ছে। বর্তমানে বছরে মাত্র ১৮০ দিন স্কুল খোলা থাকে। অপ্রয়োজনীয় ছুটি কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করবে।”
তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের যেন শিক্ষাবহির্ভূত কাজে সম্পৃক্ত না করা হয়, সে উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে।
উপদেষ্টা জানান, বর্তমানে দেশে প্রায় ৩২ হাজার প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। দীর্ঘদিন ধরে মামলার কারণে পদোন্নতি আটকে থাকলেও দ্রুত সমাধান করা হবে।
- ৮০ শতাংশ পদ পদোন্নতির মাধ্যমে
- ২০ শতাংশ পদ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে
পূরণ করা হবে। পাশাপাশি শিক্ষকদের বদলি শতভাগ অনলাইনে করা হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, দেশে সাত বছর বা তার বেশি বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৭.৯ শতাংশ। অর্থাৎ, এখনও প্রায় ২২.১ শতাংশ মানুষ নিরক্ষর রয়ে গেছে। এরা মূলত বিদ্যালয় বহির্ভূত বা ঝরে পড়া শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা লিখিত বক্তব্যে বলেন, “জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সাক্ষরতার বিকল্প নেই। শুধু অক্ষরজ্ঞান নয়, পড়তে-লিখতে পারা, অনুধাবন করা, গণনা, যোগাযোগ দক্ষতা এবং ডিজিটাল স্কিল অর্জনও সাক্ষরতার অন্তর্ভুক্ত।”
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন ২০১৪ অনুযায়ী ১০-১৪ বছর বয়সী বিদ্যালয় বহির্ভূত শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা এবং ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী নিরক্ষরদের জীবনব্যাপী শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে।
- ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬৩ জেলায় ২৫ হাজার ৮১৫টি শিখনকেন্দ্রে ৮ লাখ ২৫ হাজার ৩৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়, যার মধ্যে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৪৯৬ জন মূল ধারায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
- মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পে ৬৪ জেলার ২৪৮টি উপজেলায় ৪৪ লাখ ৬০ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষরজ্ঞান অর্জন করেছে।
- কক্সবাজারে শেষ হওয়া একটি পাইলট প্রকল্পে ৬ হাজার ৮২৫ কিশোর-কিশোরীকে সাক্ষরতার পাশাপাশি ১৩টি পেশায় কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ কর্মসূচি আরও ১৬ জেলায় সম্প্রসারণ করা হবে।
সরকার অপ্রয়োজনীয় ছুটি কমিয়ে পাঠদানের সময় বাড়ানো, প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণ এবং উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রসারে জোর দিচ্ছে।