ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
সিলেটের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর থেকে অবৈধভাবে পাথর লুটের ঘটনায় প্রকাশ্যে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। অভিযানের শেষে প্রতিবেদনে অনুসন্ধানের সুপারিশ করা হয়। পরে কমিশন সেটি পর্যালোচনা করে প্রকাশ্যে অনুসন্ধান শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
সাদাপাথর লুট নিয়ে পূর্ববর্তী প্রতিবেদনে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতাদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য উঠে এসেছে। মহাপরিচালক জানান, প্রকাশ্যে অনুসন্ধান চালানোর মূল লক্ষ্য হলো দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করা। “নথিপত্রের ভিত্তিতে যাদের সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ মিলবে, তাদের বিরুদ্ধেই তদন্ত পরিচালিত হবে।”
দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গত মঙ্গলবার কমিশনের সভায় বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য উত্থাপন করা হলে সর্বসম্মতভাবে প্রকাশ্যে অনুসন্ধান চালানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
গত ১৩ আগস্ট দুদকের সিলেট কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফি মো. নাজমুস সাদাতের নেতৃত্বে একটি টিম সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শন করে। পরে ১৬ আগস্ট কমিশনের কাছে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়—
অবৈধভাবে উত্তোলিত প্রতিটি ট্রাকে প্রায় ৫০০ ঘনফুট পাথর লোড করা হয়।
পরিবহন খরচ বাদে প্রতিটি ট্রাকের পাথরের মূল্য ধরা হয় প্রায় ৯১ হাজার টাকা।
এর মধ্যে ১০ হাজার টাকা যায় পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের হাতে।
পুলিশের জন্য ৫ হাজার টাকা এবং প্রশাসনের (ডিসি ও ইউএনও) জন্য আরও ৫ হাজার টাকা নির্ধারিত ছিল।
এছাড়া অবৈধভাবে ব্যবহৃত প্রতিটি বারকি নৌকা থেকে ১ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়, যার অর্ধেক পেত পুলিশ এবং বাকি অর্ধেক প্রশাসন।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, সংশ্লিষ্ট থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত কমিশন গ্রহণ করেছেন। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় প্রভাবশালীসহ মোট ৫৩ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
দুদক সূত্র জানায়, অবৈধ পাথর উত্তোলন ও লুটপাটে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের মাধ্যমে পুরো চক্রকে উন্মোচন করার আশ্বাস দিয়েছে সংস্থাটি।