ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ভয়াবহভাবে বাড়ছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত অন্তত ৬২২ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় দেড় হাজার মানুষ।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, স্থানীয় সময় রোববার রাত পৌনে ১২টার দিকে হিন্দুকুশ পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। কেন্দ্রস্থল ছিল জালালাবাদ শহরের উত্তর-পূর্বে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দূরে, মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। কম গভীরতায় উৎপত্তি হওয়ায় কম্পনের তীব্রতা আরও বেশি অনুভূত হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে নানগারহার, কুনার ও লগমান প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজধানী কাবুলেও শক্তিশালী কম্পন টের পাওয়া গেছে। জালালাবাদ, যা নানগারহার প্রদেশের পঞ্চম বৃহত্তম শহর, সেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে এক্স-এ দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কয়েকটি পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, উদ্ধারকারী দল ও স্বেচ্ছাসেবীরা ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
কুনার ও নানগারহারের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পর অন্তত ১৩ বার পরাঘাত (আফটারশক) অনুভূত হয়েছে। নানগারহারের পোলাদ নুরি বলেন, “আমার জীবনে এত শক্তিশালী ভূমিকম্প কখনো দেখিনি। শত শত মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে।”
তালেবান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বেশ কয়েকটি গ্রাম সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় সেখানকার ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র এখনও পরিষ্কার নয়। শুধু একটি উপত্যকাতেই শত শত মানুষের নিহত বা আহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিবিসি ও সিএনএনের রিপোর্ট অনুযায়ী, কুনার প্রদেশ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। ভূমিধ্বসের কারণে সড়কপথ বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে উদ্ধারকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অনেক গ্রাম সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যত সময় যাচ্ছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ইতিমধ্যে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তবে দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থান ও সীমিত অবকাঠামোর কারণে আফগানিস্তানের জন্য এই ভয়াবহ বিপর্যয় সামাল দেওয়া বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।