ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কন্ঠ
শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে কোটি টাকা ব্যয়ে পিরোজপুরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে স্থাপন করা হয়েছিল ডিজিটাল বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন। কিন্তু দীর্ঘ ছয় বছর ধরে এসব মেশিন অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে ব্যর্থ হয়েছে এই ব্যয়বহুল উদ্যোগ।
২০১৯ সালে স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্ল্যান (স্লিপ) প্রকল্পের আওতায় জেলার মোট ৯৮৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসব বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে নেয়া হয়েছিল ২০ হাজার টাকা করে। অথচ এসব মেশিন কার্যকর ছিল মাত্র পাঁচ থেকে ছয় মাস। এর পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় কার্যক্রম।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের মেশিন সরবরাহ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতির কারণেই এই উদ্যোগ ভেস্তে গেছে।
পিরোজপুর সদর উপজেলার মাছিমপুর এলাকার অভিভাবক জহিরুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “হাজিরা মেশিন বসানো হলেও কোনো কাজে আসেনি। প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু অর্থ লুটপাট হয়েছে। যারা এভাবে রাষ্ট্রের টাকা আত্মসাৎ করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।”
একই উপজেলার রাজারহাট এলাকার অভিভাবক খালিদ আবু জানান, “প্রকল্পটি ছিল লোক দেখানো। প্রতিটি মেশিনের দাম সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা হলেও ২০ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে। অথচ কোনো ভাউচারও দেয়া হয়নি।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোল্লা বক্তিয়ার রহমান বলেন, “বায়োমেট্রিক মেশিনগুলো চালু আছে কিনা তা সঠিকভাবে জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বলা যাবে। তবে প্রকল্পটি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে শিক্ষকদের হাজিরা মনিটরিং নিশ্চিত করা যেত। কর্তৃপক্ষ পুনরায় চালুর নির্দেশ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আপাতত বিকল্প ব্যবস্থায় উপস্থিতি নিশ্চিত করা হচ্ছে।”
অনেক বিদ্যালয়ে মেশিনগুলো এখন আর চোখে পড়ে না। তবে কিছু বিদ্যালয়ের দেয়ালে এখনও ঝুলছে এই অকেজো যন্ত্রগুলো। কিন্তু সেগুলোতে নেই কোনো ইন্টারনেট সংযোগ কিংবা রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলার ৯৮৯টি বিদ্যালয়ের জন্য বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন কেনা হয়েছিল। কিন্তু আজ তা পরিণত হয়েছে ‘লোক দেখানো’ এক ব্যর্থ প্রকল্পে।