ডেস্ক রিপোর্ট │ সকলের কণ্ঠ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের যৌথবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রোববার (৩১ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রবেশ করে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন।
এর আগে দুপুর ১২টার কিছু পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুপুর ২টা থেকে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন চবি এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সংঘর্ষ শুরুর প্রায় চার ঘণ্টা পর বিকেল ৪টার দিকে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের অন্তত ২০টি গাড়ি ২ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করে জোবরা গ্রামের দিকে যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা দেরিতে আসার কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে দুয়োধ্বনি দেন।
চবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আসিফ বলেন, “সকালে সেনাবাহিনী এসে চলে যায়। এরপর আর আসেনি। বিকেল চারটার দিকে এসেছে। সকাল থেকে থাকলে এত বড় ঘটনা ঘটতো না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিন অভিযোগ করেন, “স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জানিয়েও আমরা কোনো সহায়তা পাইনি। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থী হামলার শিকার হয়েছেন। প্রক্টরের ওপরও হামলা হয়েছে। শতশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।”
অন্যদিকে, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সান্তু বলেন, “শনিবার রাত থেকেই পুলিশ ঘটনাস্থলে ছিল। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। হাজার হাজার মানুষের বিপরীতে পুলিশের সংখ্যা কম ছিল, তাই হয়তো অনেকে পুলিশকে দেখেননি।”
সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে উপজেলা প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা অনুযায়ী, চবির ২ নম্বর গেট বাজার থেকে পূর্বদিকের রেলগেট পর্যন্ত এলাকায় আগামীকাল (১ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা পর্যন্ত কোনো সভা-সমাবেশ, মিছিল, গণজমায়েত, অস্ত্র বহন বা পাঁচজনের বেশি মানুষের একসঙ্গে অবস্থান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, সংঘর্ষে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অপরদিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ ঘটনায় তাদের অন্তত ১০-১২ জন আহত হয়েছেন।
এর আগে শনিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলে। রোববার দুপুরে ফের সংঘর্ষ শুরু হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।