ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
সিলেটের আধ্যাত্মিক নগরীতে হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজার শরিফে তিন দিনব্যাপী বার্ষিক ওরশ শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) থেকে। তবে এবারের ওরশে নেই চিরাচরিত শিরনি বিতরণ, যা প্রায় সাত শতাব্দী ধরে চলে আসা ঐতিহ্যের অংশ ছিল।
মাজারের খাদেম আব্দুল আজিজ জানান, গত বছরের অপ্রীতিকর ঘটনার পর প্রশাসনের নির্দেশে এবার শিরনি বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, “শিরনি বিতরণে মারামারি হয়, তাই এবার তা করা যাবে না।” তবে তিনি এও উল্লেখ করেন, অতীতে কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি।
এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাজার কমিটির সদস্য, স্থানীয় নাগরিক সমাজ এবং পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্ট। তাদের মতে, শিরনি শুধু ধর্মীয় আচার নয়, এটি শাহপরান মাজারের দীর্ঘ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ। শিরনি বন্ধ করাকে তারা “অন্যায় সিদ্ধান্ত” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
ওরশ উপলক্ষে প্রশাসন বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। সিলেট মহানগর পুলিশ, র্যাব-৯, সেনাবাহিনী, ডিজিএফআই, এনএসআইসহ বিভিন্ন সংস্থা যৌথভাবে নিরাপত্তা তদারকি করছে। মাজার এলাকা ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারিতে থাকবে এবং সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনে একটি তদারকি কমিটিও কাজ করবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম বলেন, “আমার কাছে কেউ এ নিয়ে আসেনি। তবে যেহেতু সিদ্ধান্ত হয়েছে, আলোচনা করেই হয়েছে বলে ধারণা করছি।”
শাহপরান (রহ.)-এর মাজারের বার্ষিক ওরশ শুধু ধর্মীয় নয়, এটি সিলেটের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিরও অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্থানীয়দের দাবি, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব, কিন্তু এর জন্য ঐতিহ্য ভেঙে শিরনি বিতরণ বন্ধ রাখা সাংস্কৃতিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।