ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
দেশের বেসরকারি খাতের শীর্ষস্থানীয় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের মুনাফায় বড় ধস নেমেছে। ২০২৪ সালে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে মাত্র ১০৯ কোটি টাকা, যেখানে আগের বছর ব্যাংকটির মুনাফা ছিল ৬৩৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে নিট মুনাফা কমেছে প্রায় ৫২৬ কোটি টাকা বা ৮৩ শতাংশ।
গত মঙ্গলবার পরিচালনা পর্ষদের সভায় ২০২৪ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পর এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেয়ারপ্রতি নিট মুনাফা (ইপিএস) নেমে এসেছে ৬৮ পয়সায়, যা ২০২৩ সালে ছিল ৩ টাকা ৯৫ পয়সা।
ইপিএসে ধস নামলেও শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) তেমন একটা কমেনি। ২০২৪ সালের শেষে এনএভি দাঁড়িয়েছে ৪৪ টাকা ৩৬ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৪৫ টাকা ২৪ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদমূল্যে কমেছে মাত্র ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
তবে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য দুঃসংবাদ হলো—এই বছর কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪২ দশমিক ২২ শতাংশ।
প্রভিশন সংরক্ষণের নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকটির রাখতে হতো প্রায় ৭৭ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা। অথচ সংরক্ষণ করা গেছে মাত্র ৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। ফলে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৯ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওমর ফারুক খান জানান, ব্যাংকের সম্পদে বড় কোনো সমস্যা নেই। তবে বিপুল অঙ্কের খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখতে হয়েছে, যা মুনাফায় বড় ধাক্কা দিয়েছে।
তিনি বলেন,
“লভ্যাংশ দিতে না পারার কারণ হলো পর্যাপ্ত প্রভিশন সংরক্ষণ করতে না পারা। বাংলাদেশ ব্যাংক শর্ত দিয়েছে, প্রভিশন ঘাটতি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করা যাবে না।”
এমডি আরও বলেন, “ব্যাংকটি যিনি লুট করেছেন, তাঁর দেশে ও বিদেশে ২৪টি প্রতিষ্ঠানের নামে ৮২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ইতোমধ্যে আদালতের আদেশে সেই শেয়ার অবরুদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি শেয়ারের ভোটিং ক্ষমতাও স্থগিত করা হয়েছে। এখন আইনি প্রক্রিয়ায় এসব শেয়ার সরকারের মালিকানায় নেওয়ার কাজ চলছে।”