ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
ভারত যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে আরোপিত শুল্কের হুমকি কার্যত উপেক্ষা করেছে। রাশিয়ায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত বিনয় কুমার বলেছেন, দেশের জনগণের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই দিল্লির প্রধান লক্ষ্য। তাই যে দেশ থেকেই সবচেয়ে সাশ্রয়ী দামে তেল পাওয়া যাবে, ভারত সেখান থেকেই তা কিনবে।
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “ভারতের বাণিজ্য বাজারের বাস্তবতা নির্ধারণ করে। তাই কোনো চাপ বা শর্ত দিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন সম্ভব নয়।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এ পদক্ষেপকে “অন্যায্য ও অগ্রহণযোগ্য” বলে মন্তব্য করেছেন বিনয় কুমার।
অন্যদিকে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানিয়েছেন, এই শুল্ক আরোপের উদ্দেশ্য হলো রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করে ইউক্রেন যুদ্ধ থামানো।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “যারা নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থে নানা সিদ্ধান্ত নেয়, তাদের অন্যদের ব্যবসা নিয়ে অভিযোগ তোলা হাস্যকর।”
আগামীকাল (বুধবার) থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতের পণ্য প্রবেশে ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা। এ অবস্থায় শুল্ক কমাতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে দিল্লি। ইতোমধ্যেই দ্বিতীয় একটি লবিং ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করেছে দেশটি।
চুক্তি অনুযায়ী, ভারতকে প্রতিষ্ঠানটিকে প্রতি মাসে ৭৫ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা) গুনতে হবে। জানা গেছে, ১৫ আগস্ট থেকেই ঘনিষ্ঠ এই মার্কিন লবিং ফার্ম কার্যক্রম শুরু করেছে।
শুল্কের চাপ সামাল দিতে ভারত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অর্থনৈতিক জোটের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তি করছে। ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মরিশাস, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ফ্রি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সমঝোতা সম্পন্ন হয়েছে।
এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন, নিউজিল্যান্ড, চিলি, পেরু, ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়ন ও ওমানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার অগ্রগতি হচ্ছে।
চীনের সঙ্গে বিরল খনিজ, সার ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। পাশাপাশি, রাশিয়ার সঙ্গে ৫৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে দিল্লি নতুন করে আলোচনা চালাচ্ছে।
এদিকে, জাপান আগামী ১০ বছরে ভারতে এক হাজার কোটি ইয়েন বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক চাপ মোকাবিলায় এ ধরনের বহুমুখী চুক্তি ও বিনিয়োগ ভারতের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে।