সকলের কণ্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট |
ইসরায়েলি হামলায় বিপর্যস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মানবিক সংকট আরও গভীরতর হয়েছে। শনিবার ভোর থেকে দিনভর ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৬২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই খাদ্য সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রোববার (৩ আগস্ট) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
নিহতদের মধ্যে ৩৮ জন প্রাণ হারান এমন স্থানে সহায়তা নিতে গিয়ে, যেগুলো পরিচালনা করছে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)—একটি বিতর্কিত সংস্থা, যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে পরিচালিত হয়।
এমন ঘটনা এই প্রথম নয়; এর আগেও জিএইচএফ-এর সহায়তা কেন্দ্রগুলোতে প্রাণঘাতী হামলার নজির রয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১,৩৭৩ জন ফিলিস্তিনি।
শুধু বুধবার ও বৃহস্পতিবারেই খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১০৫ জন।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, সহায়তার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ইসরায়েলি সেনারা ও মার্কিন কন্ট্রাক্টররা গুলি চালিয়েছে, যার ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধকালীন অপুষ্টি ও অনাহারে মৃত্যু হয়েছে আরও ১৬৯ জনের, যাদের মধ্যে ৯৩ জন শিশু।
মানবিক সংকট মোকাবেলায় সম্প্রতি জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, স্পেন, জার্মানি এবং ফ্রান্স গাজায় আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহ করছে।
তবে জাতিসংঘের ইউএনআরডব্লিউএ এবং অন্যান্য মানবিক সংগঠনগুলো বলছে, এই উদ্যোগ অপ্রতুল, কারণ আকাশপথে ত্রাণ নিক্ষেপে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার গাজায় প্রবেশ করেছে মাত্র ৩৬টি ত্রাণবাহী ট্রাক, অথচ প্রতিদিন প্রয়োজন অন্তত ৬০০টি ট্রাক।
গাজার খান ইউনিস এলাকায় ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদর দপ্তরে ইসরায়েলি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে সংস্থাটির একজন কর্মী নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছেন।
এক্স প্ল্যাটফর্মে দেওয়া পোস্টে সংস্থাটি জানায়, হামলায় দপ্তরের প্রথম তলায় আগুন ধরে যায়।
গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে আল-জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খোদারি জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক ত্রাণ পৌঁছালেও বাস্তবতা অপরিবর্তিত। খাবার বাজারে নেই বললেই চলে, যা কিছু আছে তার দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
ফলে জীবন ঝুঁকিতে ফেলেই খাদ্য সংগ্রহে বাধ্য হচ্ছেন মানুষ।