ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ/:-
ইরান থেকে অন্তত ১৫ লাখ আফগান নাগরিককে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’-এর হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। নির্যাতনের শিকার কিছু আফগান নাগরিক অভিযোগ করেছেন, তারা পাশবিক নির্যাতনের মুখে পড়েছেন।
নির্যাতনের শিকার আলির অশ্রুসিক্ত বর্ণনা
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নির্যাতিত আফগান নাগরিক আলি আহমেদ বলেন, “তারা আমার ওপর পশুর মতো আচরণ করেছে। পানির পাইপ ও কাঠের বোর্ড দিয়ে আমাকে মারধর করেছে। আমার মোবাইল ফোন ও অর্থ ছিনিয়ে নিয়েছে।” সাক্ষাৎকারের সময় তিনি পিঠের আঘাতের দাগ দেখিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
উল্লেখ্য, মাসের শুরুতে বিবিসির সঙ্গে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার সময় তাঁর পরিচয় গোপন রাখা হয়েছিল। আলি আহমেদ আরও জানান, তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ তোলা হয় শুধুমাত্র ইরানে অবস্থান করার জন্য।
ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তেজনা, নিরাপত্তা শঙ্কায় আফগান প্রত্যাবাসন
মার্চ মাসে ইরান সরকার ৪০ লাখ অনথিভুক্ত আফগান নাগরিকের মধ্যে যাদের কাছে বৈধ নথিপত্র নেই, তাদের স্বেচ্ছায় দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেয়। কিন্তু সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে নিরাপত্তার অজুহাতে হাজার হাজার আফগানকে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, জুলাইয়ের শুরুতে দৈনিক গড়ে প্রায় ৫০ হাজার আফগানকে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এসব আফগানের একটি অংশ মোসাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, কোনো প্রকার বৈধ বিচার বা তদন্ত ছাড়াই এভাবে আফগান নাগরিকদের ওপর নির্যাতন ও দেশ ছাড়ার নির্দেশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত ও অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত আফগানিস্তানে এত বিপুল সংখ্যক নাগরিকের জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন মানবিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে।