ডেস্ক রিপোর্ট, সকলের কণ্ঠ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশে একজন ব্যক্তিকে কেন্দ্র করেই পূজা-অর্চনা চলছে। অথচ এই দেশ গড়ার পেছনে আরও অনেক বীর ও দার্শনিকের অবদান রয়েছে, বিশেষ করে মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে টাঙ্গাইলের নিরালা মোড়ে আয়োজিত এক কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “মাওলানা ভাসানী ছিলেন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে সাহসী কণ্ঠস্বর। তিনি পিণ্ডির শোষণ ও দিল্লীর দাসত্ব উভয়ের বিরুদ্ধেই লড়াই করেছেন। ফারাক্কার পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য তাঁর সংগ্রাম আজও আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়।”
তিনি আরও বলেন, “১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক ছিলেন মাওলানা ভাসানী। তিনি ছিলেন কেবল একজন রাজনীতিক নন, বরং একজন দার্শনিক, সমাজ পরিবর্তনের দূরদর্শী চিন্তক। তিনি ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর কথা বলতেন—একটি শোষণহীন, দারিদ্রমুক্ত ও দায়িত্বশীল রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখতেন।”
এসময় এনসিপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, “আমরা মাওলানা ভাসানীকে জাতির প্রকৃত স্থপতি ও ‘ফাউন্ডিং ফাদার’ মনে করি। একজন নয়, দেশের স্বাধীনতা ও উন্নয়নে অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।”
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর হামলা ও লুটপাটের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এনসিপি আহ্বায়ক। তিনি বলেন, “যারা মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করেছে, তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তবে সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে, তারা দেশকে সাম্প্রদায়িক বিভেদে ঠেলে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার এসব পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ফ্যাসিস্ট কায়দায় হামলা, লুটপাট ও জমি দখল করেছে—এর দৃষ্টান্ত আমরা অতীতে দেখেছি।”
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “টাঙ্গাইলে জুলাই যোদ্ধা মারুফ শহীদ হয়েছেন, কিন্তু পুলিশ এখনও আসামিদের গ্রেপ্তার করেনি। প্রশাসনের কোনো তৎপরতা নেই। উল্টো কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী মামলা নিয়ে বাণিজ্য করছে। আমরা প্রশাসনের এমন পক্ষপাতমূলক আচরণ পর্যবেক্ষণ করছি এবং যারা এসব অনৈতিক কাজ করছে তাদের চিনে রাখছি।”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “দেশে আর কোনো চাঁদাবাজ, মামলাবাজ ও দুর্নীতিবাজের জায়গা হবে না। মিডিয়া, প্রশাসন ও রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি এবং প্রয়োজনে তা জাতির সামনে তুলে ধরবো।”
সভার সঞ্চালনা করেন নাসীরউদ্দিন পাটওয়ারী। বক্তব্য দেন—আজাদ খান ভাসানী, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সাইফুল্লাহ হায়দার, অলিক মৃ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মেজর সালাউদ্দিন (অবঃ), সাইফুল ইসলাম এবং টাঙ্গাইলের প্রধান সমন্বয়কারী মাসুদুর রহমান রাসেল।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন—দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র সদস্যসচিব সারোয়ার নিভা, ডা. তাজনুভা জাবিন, যুগ্ম সমন্বয়কারী কামরুজ্জামান শাওন, রবিউল ইসলাম রবি এবং জেলা কমিটির সদস্য আনোয়ার জাহান, ইসরাত জাহান রুমি, জাহিদ আহমেদ খান, লাভলী সুলতানা প্রমুখ।