ডেস্ক রিপোর্ট, সকলের কণ্ঠ,২৯ জুলাই ২০২৫
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা ও নিষ্ঠুর অবরোধে একদিনে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮০ ফিলিস্তিনি। একই সময়ে অনাহার ও অপুষ্টির কারণে মারা গেছেন আরও ১৪ জন, যাদের মধ্যে দুজন শিশু। ভয়াবহ এই মানবিক বিপর্যয়ের খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানানো হয়েছে, চলমান যুদ্ধ ও অবরোধের প্রেক্ষাপটে এখন পর্যন্ত অপুষ্টিজনিত কারণে মারা গেছেন ১৪৭ জন, যার মধ্যে ৮৮ জনই শিশু। কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
খাদ্য সংকট তীব্রতর
চলতি বছরের মার্চে ইসরায়েল গাজায় পূর্ণাঙ্গ অবরোধ আরোপ করে। মে মাসে আংশিকভাবে তা তুলে নেওয়া হলেও এখনও পর্যাপ্ত খাদ্য ও ওষুধ প্রবেশ করতে পারছে না। সীমিত সহায়তা ঢোকানোর সুযোগ থাকলেও তা চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল।
জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোর একাধিক সতর্কবার্তার পরও কার্যকর মানবিক সহায়তা নিশ্চিত হয়নি। ফলে, দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
“হাঁটতে থাকা লাশ”—UNRWA প্রধান
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রধান ফিলিপ ল্যাজারিনি জানান, গাজায় তার সহকর্মীরা এমন মানুষ দেখছেন যারা “না বেঁচে আছে, না মরেছে— যেন হাঁটতে থাকা লাশ”।
জাতিসংঘের এক সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, “শুধু নিন্দা নয়, এখনই যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে হবে, দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে হবে এবং বন্দিদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে।”
ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা, নেতানিয়াহুর অস্বীকার
স্কটল্যান্ড সফরকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “গাজায় প্রকৃত অর্থেই দুর্ভিক্ষ চলছে। ইসরায়েল এ অবস্থার জন্য বড় ধরনের দায় বহন করে।”
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগের দিন দাবি করেন, “গাজায় কোনো দুর্ভিক্ষ নেই।” তবে তিনি স্বীকার করেন, “মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে ইসরায়েল কাজ করছে।”
শিশুদের জীবন হুমকির মুখে
গাজা সরকারের গণমাধ্যম অফিসের তথ্যমতে, ৪০ হাজারের বেশি শিশু ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে, কারণ গত ১৫০ দিনে ইসরায়েল শিশু খাদ্য ঢুকতে দেয়নি।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই মানবিক বিপর্যয় রোধে অবিলম্বে এবং শর্তহীনভাবে সব সীমান্ত ক্রসিং খুলে দিতে হবে।”