ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১২তম আসরকে ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিবেচনা করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ক্রিকেটারদের প্রস্তুতির সুযোগ দিতে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে আয়োজিত হতে যাচ্ছে এবারের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটি। তবে চূড়ান্ত সময়সূচি নির্ভর করছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখের ওপর।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ও বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম জানান, “জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর সুনির্দিষ্টভাবে ঠিক হবে টুর্নামেন্টের সময়। তবে সম্ভাব্য সময় হিসেব করে বাকি প্রস্তুতি এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।”
ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে জাতীয় নির্বাচন হলে, ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যেই লিগ শেষ করতে হবে। কারণ, জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল ইতোমধ্যে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। শনিবার (২৭ জুলাই) ছিল দরপত্রে অংশগ্রহণের শেষ সময়। গতকাল (২৮ জুলাই) অংশগ্রহণকারী পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে চারটি আন্তর্জাতিক এবং একটি দেশি-বিদেশি যৌথ উদ্যোগ।
জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মানের অভিজ্ঞতা থাকায় ‘ইন্টারন্যাশনাল ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ’ (আইএমজি) তালিকার শীর্ষে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আইপিএল আয়োজন করেছে। এছাড়াও ইনস্টেডিয়া ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ টিসিএম স্পোর্টস বিডে অংশ নিয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
একজন বোর্ড কর্মকর্তা বলেন, “আমরা বিডে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে তালিকাভুক্ত করেছি। কে কীভাবে বিপিএল পরিচালনা করবে এবং বিনিময়ে কত আর্থিক প্রস্তাব দেবে, তা দেখার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যেহেতু সব প্রতিষ্ঠানই আন্তর্জাতিক, তাই প্রতিযোগিতা হবে আশা করছি।”
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল জানায়, ৫ আগস্টের মধ্যে অভিজ্ঞ একটি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত করা হবে। এরপর দ্রুত বাকি প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হবে।
গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আনাম জানান, “বিপিএলের আগের ১১ আসরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার একটি পেশাদার ও স্বচ্ছ টুর্নামেন্ট উপহার দিতে চাই। তাই লিগটিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
গত এক মাসে গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যরা ক্রিকেটার, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। ফ্র্যাঞ্চাইজি মনোনয়নের কাজও অনেক দূর এগিয়েছে।
জানা গেছে, ১২তম আসরে ছয়টি দল অংশ নিতে পারে এবং ছয় বছরের জন্য দেওয়া হতে পারে ফ্র্যাঞ্চাইজি স্বত্ব। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা দলগুলোতে যুক্ত হতে পারেন। আইএমজি দায়িত্ব পেলে বিদেশি স্পন্সর এবং আন্তর্জাতিক টিভি চ্যানেলের আগ্রহ বাড়বে বলেই মনে করছে বিসিবি।
২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বিপিএলকে সেরা মঞ্চ হিসেবে তৈরি করতে চায় বিসিবি। খেলোয়াড়রা যেন ঘরোয়া লিগে খেলার ছন্দ নিয়ে বিশ্বকাপে অংশ নিতে পারেন—এটাই এবারের বিপিএলের মূল লক্ষ্য।
বিপিএলের সময়সূচি, অংশগ্রহণকারী দল, বিদেশি ক্রিকেটার ও সম্প্রচার–সবকিছুই নির্ধারিত হবে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের নিয়োগের পর। তাই ক্রিকেট ভক্তদের এখন চোখ ৫ আগস্টের দিকে।