ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
নেত্রকোনা:
‘আওয়ামী লীগ সরকার ১৬ বছর ধরে জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে। জনগণ আর চুপ করে থাকেনি, জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই স্বৈরাচারী সরকারকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামিয়েছে’—এ কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে নেত্রকোনায় সংক্ষিপ্ত পদযাত্রা ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দেশব্যাপী এনসিপির “জুলাই পদযাত্রা”-র অংশ হিসেবে নেত্রকোনা জেলা শহরের মোক্তারপাড়া কালেক্টরেট মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এই সমাবেশ।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “মুজিববাদ এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। এ দেশে আর কোনো একনায়কতন্ত্র চলবে না। আমরা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন সংবিধান চাই। একটি গণকল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠনই আমাদের লক্ষ্য।”
তিনি আরও বলেন, “নেত্রকোনা একটি বন্যা-প্রবণ জেলা। তাই এ জেলার টেকসই উন্নয়নের জন্য এনসিপিকে জনগণের পাশে থাকতে দিন। ইন-শা-আল্লাহ, জাতীয় নাগরিক পার্টি জনগণের সেবা ও কল্যাণেই কাজ করবে।”
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে আমরা রাজপথে নেমেছি। এই আন্দোলন থামবে না, যতক্ষণ না দেশে সংস্কার ও নতুন সংবিধান প্রতিষ্ঠা হয়।”
সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী। তিনি বলেন, “৭২ সালের সংবিধান ছিল একপাক্ষিক। ভারতীয় আধিপত্যের ছায়ায় তৈরি সেই সংবিধানে মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা চাই এমন একটি সংবিধান, যেখানে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকল নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যারা এই দেশের মানুষকে গুম করে, খুন করে সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে, তাদের বিচার হবেই ইন-শা-আল্লাহ।”
লুৎফুজ্জামান বাবরের সমালোচনা
বক্তব্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের প্রসঙ্গ টেনে নাসির পাটোয়ারী বলেন, “দশ ট্রাক অস্ত্র আনলেন, যদি তা সামাল দিতেই না পারেন, তবে আনলেন কেন? সেই অস্ত্রের কারণে দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।”
সমাবেশ ও পরবর্তী কর্মসূচি
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন—এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল, সংগঠক সারজিস আলম প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন সারজিস আলম ও প্রীতম সোহাগ।
পরে সংক্ষিপ্ত এই সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় নেতারা দ্রুত শেরপুরের উদ্দেশে রওনা দেন।
এর আগে নেত্রকোনা জেলা শহরে একটি পদযাত্রা করার কথা থাকলেও তা স্থগিত রেখে নেতারা সার্কিট হাউজে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।