ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ –
ভোজ্যতেলের দাম কমাতে তেল আমদানিকারক ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে ব্যবসায়ীদের আপত্তির কারণে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) অনুষ্ঠিত এ বৈঠকটি কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়।
দাম ও সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে আগামী শনিবার (২৭ জুলাই) আবারও বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন—বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এছাড়া সিটি, মেঘনা, টি কে এবং বসুন্ধরা গ্রুপসহ তেল আমদানিকারক ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও বৈঠকে অংশ নেন।
আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েলের দাম কমলেও আপত্তি ব্যবসায়ীদের
বৈঠকে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম সামান্য পরিবর্তিত হয়েছে। ১৫ জুলাইয়ের হিসাব অনুযায়ী, সয়াবিন অয়েলের FOB মূল্য ছিল ১,০৭৯ ডলার এবং পাম অয়েলের মূল্য ১,০১৭ ডলার, যেখানে ১৫ এপ্রিল এ দাম ছিল যথাক্রমে ১,০০৩ ডলার ও ১,০৫২ ডলার।
এই হিসাবে দেখা যায়, সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ০.৭% এবং পাম অয়েলের দাম কমেছে প্রায় ৩%। তাই অভিন্ন মূল্য নির্ধারণ কাঠামো অনুযায়ী খোলা পাম অয়েলের ক্ষেত্রে ১৯ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে ১ টাকা পর্যন্ত দাম কমানোর সুযোগ রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
তবে এই মূল্যহ্রাসের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, ট্যারিফ কমিশন আন্তর্জাতিক বাজারের সঠিক চিত্র তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের মতে, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম ১,১০০ ডলারের বেশি।
এছাড়া আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ের মূসক (ভ্যাট) হিসাবও প্রতিবেদনে উপেক্ষিত রয়েছে। যার ফলে দাম কমানোর প্রস্তাব বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলেই দাবি তাদের।
মেঘনা গ্রুপের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) তসলিম শাহরিয়ার বলেন,
> “বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত হিসাব ভুল। আন্তর্জাতিক বাজারের আপডেট দাম ও আমদানি-উৎপাদন পর্যায়ের ভ্যাট—দুটোর কোনোটিই বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। বর্তমানে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম ১,১০০ ডলারের বেশি। এসব তথ্য আমলে নিলে বোঝা যায় দাম কমানোর সুযোগ এখন নেই।”
সব পক্ষের মতামত ও তথ্য পর্যালোচনার ভিত্তিতে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ভোজ্যতেলের বর্তমান মূল্য কাঠামো নতুন করে বিশ্লেষণ করা হবে। আগামীকাল শনিবার আবারও এই ইস্যুতে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
দাম নিয়ে জটিলতা নিরসনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে একটি যৌক্তিক সমাধান খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।