সকলের কণ্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট:
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলে এবার যোগ হলো আরও একটি কোমল প্রাণের নাম—সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জারিফ। মাত্র চারদিন প্রাণপণ লড়াইয়ের পর শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে এই শিশুটি।
দুই ভাইবোনের মধ্যে ছোট ছিল জারিফ। পড়তো উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। প্রতিদিনের মতোই বইখাতা গুছিয়ে স্কুলে গিয়েছিল সে। কিন্তু আর ফেরা হয়নি। নিঃশব্দ হয়ে গেছে তার বাসার প্রতিটি কোণ, নিভে গেছে এক কচি কণ্ঠের হাসির আলো।
ঘটনার দিন প্রতিদিনের মতো মা তাকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে বাসায় ফেরেন। কিন্তু দুপুরের দিকে বিমান দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পরিবার ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। কোথাও খুঁজে না পেয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পর বিকেল আনুমানিক ২টার দিকে একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে জারিফের বাবা হাবিবুর রহমানকে ফোনে জানানো হয়—একজন দগ্ধ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, নাম জারিফ। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
পরিবার জানায়, ঢামেকে ভর্তির পর থেকেই জারিফ ছিল আইসিইউতে। শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় দিন দিন পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত হার মানে ছোট্ট এই জীবন। এখনও কিশোরত্বে পৌঁছানো হয়নি, তবুও জীবনের শুরুতেই থেমে যেতে হলো তাকে।
জারিফের বাবা হাবিবুর রহমান একজন ব্যবসায়ী। পরিবারের ছোট সন্তান ছিল সে। জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. নাসির উদ্দীন জানান, দুর্ঘটনায় আহতদের আলাদা ক্যাটাগরিতে ভাগ করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুর ও চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল চিকিৎসায় অংশ নিয়েছে। ১৫ জনের অবস্থা উন্নতির দিকে। তাদের ধাপে ধাপে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
হাসপাতাল চত্বরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিমানবাহিনী সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে। বার্ন ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, বর্তমানে রক্ত বা চামড়ার ডোনেশনের প্রয়োজন নেই এবং সব ধরনের চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে সরকার।