ডেস্ক রিপোর্ট | সকলের কণ্ঠ
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুন মোড় নিচ্ছে। এবার আর শুধু পরমাণু স্থাপনায় হামলা নয়, বরং সরাসরি ইরানের ক্ষমতাসীন সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রে নেমেছে ইসরায়েল। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আলজাজিরা। ইরান বিষয়ক একাধিক বিশ্লেষকের মতে, ইরান যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ইসরায়েলকে সামরিক হামলার জন্য ‘সবুজ সংকেত’ দেবে পশ্চিমারা।
আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতোমধ্যেই গুপ্তচর নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইরানের অভ্যন্তরে ছোটখাটো হামলা চালাচ্ছে তেলআবিব। এসব হামলা দিয়ে ইসরায়েল তার উপস্থিতি ও আগ্রাসী মনোভাবের জানান দিচ্ছে বলে মন্তব্য বিশ্লেষকদের।
১২ দিনের ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের স্মৃতি এখনো জ্বলজ্বলে। ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানীসহ অন্তত এক হাজার মানুষ। সেই হামলায় ভেঙে পড়ে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ধ্বংস হয় দেশটির বহু ‘অভেদ্য’ পরমাণু স্থাপনা।
ইরান বিষয়ক বিশ্লেষক ত্রিতা পারসি বলেন, “ইসরায়েল চায় ইরানকে এমন এক দুর্বল রাষ্ট্রে পরিণত করতে, যেন তারা সিরিয়া বা লেবাননের মতো যখন খুশি হামলা চালাতে পারে।” তার মতে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রাজনৈতিক চাপে পড়লেই আবারও ইরানে উত্তেজনা ছড়াতে উদ্যোগী হন।
আরেক বিশ্লেষক ওরি গোল্ডবার্গ বলেন, “নেতানিয়াহু নিজে কিছু করবে না যদি না যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্মতি দেন। কিন্তু একবার অনুমতি পেলে ইরানে হামলা চালানো তার জন্য সহজ বিষয়।”
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন চাইছে চলতি আগস্টের মধ্যেই ইরানের সঙ্গে একটি পরমাণু চুক্তি চূড়ান্ত করতে। তবে ইরান এতে ব্যর্থ হলে নতুন করে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে পশ্চিমা জোট, আর সেই সুযোগেই সামরিকভাবে সক্রিয় হবে ইসরায়েল।
যদিও সরাসরি বড় ধরনের সংঘাতে জড়ায়নি ইসরায়েল, তথাপি তারা ইরানের অভ্যন্তরে তাদের গোপন গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ছোটখাটো হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব হামলার উদ্দেশ্য, ইরানের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ফাঁকফোকর খোঁজা এবং ভবিষ্যতের বড় হামলার ভিত্তি তৈরি করা।