ডেস্ক রিপোর্ট: সকলের কন্ঠ ২৫,জুলাই ২০২৫
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ছিনতাইকারীর চাপাতির আঘাতে আহত হয়েছেন সাংবাদিক আহমাদ ওয়াদুদ। ঘটনার পরপরই তিনি অভিযোগ জানাতে থানায় গেলে পুলিশের চরম অবহেলা ও অসহযোগিতার মুখে পড়েন বলে অভিযোগ করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরার পর নড়েচড়ে বসে পুলিশ, গ্রেপ্তার হয় তিন ছিনতাইকারী।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড়ে ছিনতাইয়ের শিকার হন বণিক বার্তার সহসম্পাদক আহমাদ ওয়াদুদ। ছিনতাইকারীরা তার মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং চাপাতি দিয়ে আঘাত করে। তবে সৌভাগ্যবশত আঘাত গুরুতর ছিল না।
তিনি জানান, ঘটনার মাত্র পাঁচ মিনিটের মাথায় তিনি স্ত্রীকে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে চান। কিন্তু ডিউটি অফিসার এসআই জসীম উদ্দিন অভিযোগ নিতে অস্বীকৃতি জানান। বরং আহত আহমাদের খোলা বোতাম দেখে রুঢ় ভাষায় বলেন, “শার্টের বোতাম লাগান।”
এরপর তিনি ওসির (অফিসার ইন চার্জ) কক্ষে গিয়ে পুরো ঘটনা তুলে ধরেন। ওসি আলী ইফতেখার হাসান তাকে বলেন, “আমি ওসি হয়েও সস্তা ফোন ব্যবহার করি। আপনি এত দামি ফোন নিয়ে ঘুরলে ছিনতাই তো হবেই!”
দায়িত্বে অবহেলা এখানেই শেষ নয়। থানায় অভিযোগ লেখার জন্য কলম চাইলেও দেয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে স্ত্রী নিজের ব্যাগ থেকে কলম বের করে দেন, তারপর লিখিত অভিযোগ জমা দেন আহমাদ। ডিউটি অফিসার অভিযোগের কোনো কপি না দিয়ে বরং একটি নম্বর দিয়ে বলেন, “এটি এএসআই আনারুলের নম্বর, তিনিই দায়িত্বে আছেন। ওনার সঙ্গেই যোগাযোগ করুন।”
পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে পুলিশ নিয়ে গেলেও ছিনতাইকারীরা চিনিয়ে দেয়ার পরও তাদের ধরতে গড়িমসি করে পুলিশ। আহমাদের অভিযোগ, “আমি দূর থেকে ছিনতাইকারীদের দেখিয়ে দিলেও আনারুল সেখানে না গিয়ে শুধু দাঁড়িয়ে থাকেন। ফলে তারা ধীরে ধীরে সরে যায়।”
ফেসবুকে এই ঘটনার বিস্তারিত লিখলে তা ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। এরপর শুক্রবার (২৫ জুলাই) পুলিশ তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে বলে জানায়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো– ইউসুফ, সিয়াম ও জহুরুল।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান জানান, “বিষয়টি নজরে আসার পরপরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার কারণে চারজনকে মোহাম্মদপুর থানা থেকে প্রত্যাহার করে আমার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। অতিরিক্ত উপকমিশনার আলমগীর কবিরকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
প্রত্যাহারকৃত পুলিশ সদস্যরা হলেন: এসআই জসীম উদ্দিন, এএসআই আনারুল, কনস্টেবল মাজেদুর রহমান ও মো. নুরুন্নবী।
তবে ওসি আলী ইফতেখার হাসান সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, আহমাদ ওয়াদুদ ফেসবুকে ‘মনগড়া’ বক্তব্য দিয়েছেন, এমন কিছু তিনি বলেননি।