সারাদেশ ডেস্ক
ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বা পেশাগত প্রয়োজনে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে এখন আরও কঠিন শর্তে পড়তে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার অস্ত্র লাইসেন্স প্রদানের নিয়ম-কানুনে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, পিস্তল, রিভলবার ও রাইফেল পেতে হলে পরপর তিন অর্থবছর আয়কর দিতে হবে বছরে কমপক্ষে পাঁচ লাখ টাকা। শটগানের ক্ষেত্রে লাগবে তিন বছর ধরে বছরে দুই লাখ টাকা করে আয়কর।
২০২৪ সালের ১০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা’ সংশোধন করে এই নতুন নীতিমালা জারি করে। আগের নিয়মে পিস্তল, রিভলবার ও রাইফেল পেতে প্রয়োজন হতো বছরে তিন লাখ টাকা এবং শটগানের জন্য এক লাখ টাকা আয়কর।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগ্নেয়াস্ত্রের অপব্যবহার রোধ ও লাইসেন্স প্রক্রিয়াকে আরও কঠিন করতেই এই পরিবর্তন। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী:
পিস্তল ও রিভলবারের লাইসেন্স ইস্যু ফি: ৩০ হাজার থেকে বেড়ে ৬০ হাজার টাকা
বন্দুক, শটগান ও রাইফেল: ২০ হাজার থেকে বেড়ে ৪০ হাজার টাকা
পিস্তল ও রিভলবারের নবায়ন ফি: ১০ হাজার থেকে বেড়ে ২০ হাজার টাকা
বন্দুক, শটগান ও রাইফেলের নবায়ন ফি: ৫ হাজার থেকে বেড়ে ১০ হাজার টাকা
ডিলার ও অস্ত্র মেরামতকারীদের লাইসেন্স ফিও ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৪০ হাজার টাকা করা হয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য লাইসেন্স ইস্যু ফি এখন ৫০ হাজার টাকা, যা আগে ছিল ২০ হাজার। অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ফি বেড়ে হয়েছে ১ লাখ টাকা।
বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক বা দ্বৈত নাগরিকরা যদি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে চান, তাহলে গত তিন বছর প্রতি বছর কমপক্ষে ১২ লাখ টাকা রেমিট্যান্স পাঠানো এবং বিদেশে আয়কর দেওয়ার প্রমাণ দিতে হবে।
যাঁরা ফি ও আয়কর ছাড়াই লাইসেন্স পাবেন
নতুন নীতিমালায় নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণির ব্যক্তিদের জন্য শিথিলতা রাখা হয়েছে। তাঁরা আয়কর না দিলেও আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাবেন। এ তালিকায় রয়েছেন:
স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সমমর্যাদার ব্যক্তি
সিটি করপোরেশন ও ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভার মেয়র
জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান
রাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক পদে কর্মরত ব্যক্তি
সামরিক বাহিনীর কমিশন্ডপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (চাকরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত)
মুক্তিযোদ্ধা (সনদপ্রাপ্ত)
জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃত সাহিত্যিক, শিল্পী, ক্রীড়াবিদ, গবেষক ও বিজ্ঞানী
এছাড়া জাতীয় বেতন স্কেলের ষষ্ঠ গ্রেড বা তার ঊর্ধ্বে থাকা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তারাও লাইসেন্স ফি ও নবায়ন ফি থেকে অব্যাহতি পাবেন।
যাঁরা লাইসেন্স পাবেন না
ফৌজদারি মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাবেন না। কেউ যদি আদালতের মাধ্যমে দণ্ডিত হন, তাহলে সাজা শেষ হওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।