জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের দুই শিক্ষক ও তিন শিক্ষার্থীর ওপর ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। রোববার (১৩ জুলাই) বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ভবন ঘেরাও করে প্রতিবাদ জানান।
বিকেল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে উপাচার্য ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন— ‘যেই হাত শিক্ষক মারে, সেই হাত ভেঙে দাও’, ‘ছাত্রদলের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘সন্ত্রাসীদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’। তারা দাবি করেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন সন্ত্রাস কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, “যেখানে শিক্ষকরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্বে থেকে নিরাপত্তা পান না, সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কিভাবে নিরাপদ থাকবে?” তারা অভিযোগ করেন, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট এমন গুজব ছড়িয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
তারা আরও বলেন, এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিংবা শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে এ ঘটনায় কোনো বিবৃতি বা নিন্দা জানানো হয়নি, যা অত্যন্ত হতাশাজনক।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেলে শহীদ সাজিদ ভবনের নিচে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী রফিক বিন সাদেক রেসাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। ওই সময় তাকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ড. এ কে এম রিফাত হাসান এবং সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলামকেও মারধর করা হয়।
এছাড়া, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) জবি শাখার সভাপতি মো. ফয়সাল মুরাদ, মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস হাসান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুককেও একই সময়ে মারধরের শিকার হতে হয়।
শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি:
দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার
প্রশাসন ও শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক নিন্দা প্রকাশ
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে, আন্দোলন আরও বেগবান করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা।