আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাকরন এবং মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম একযোগে জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার (৫ জুলাই) প্যারিসে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান দুই নেতা। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের একটি টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা। দুই নেতাই বলেন, শান্তির পথে এগোতে হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
ম্যাকরন বলেন, “ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজায় সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে। খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির প্রবাহ নিশ্চিত করতে না পারলে মানবিক বিপর্যয় আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।”
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানে গাজায় এখন পর্যন্ত ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের একটি বড় অংশ নারী ও শিশু। বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ গাজাবাসী এবং অর্ধেকেরও বেশি অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।
খাদ্য সংকট, চিকিৎসার অভাব ও জ্বালানির অপ্রতুলতায় পুরো অঞ্চলজুড়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ইসরায়েলকে গণহত্যা প্রতিরোধে প্রাথমিক পদক্ষেপ নিতে বলা হলেও, সহিংসতা থামছে না।
ম্যাকরন ও আনোয়ার উভয়েই একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে মত দেন, যা ইসরায়েলের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করবে। তারা বলেন, ‘দুই-রাষ্ট্র নীতিই একমাত্র টেকসই সমাধান হতে পারে।’
সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম সাম্প্রতিক ইরান হামলারও নিন্দা জানান এবং পশ্চিমা বিশ্বের ‘দ্বিমুখী নীতির’ সমালোচনা করে বলেন, “ইরানকে ‘না’ বললেও যদি ইসরায়েলকে ‘হ্যাঁ’ বলা হয়, তাহলে ন্যায়বিচার অসম্পূর্ণই থেকে যায়।”
তিনি আরও বলেন, “ইরানকে অবশ্যই শান্তিপূর্ণ উপায়ে পরমাণু কার্যক্রম চালাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক পরিদর্শন মেনে নিতে হবে।”
দুই নেতার এই যৌথ আহ্বান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপর চাপ আরও বাড়িয়েছে, যাতে ইসরায়েল ও হামাস উভয়পক্ষই শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। সেই সঙ্গে, গাজায় চলমান মানবিক সংকট মোকাবেলায় জরুরি সহায়তা প্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বনেতাদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
—
সূত্র: আল জাজিরা