ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার ও বর্তমান ডিআইজি হারুন অর রশীদ তার চাকরি জীবনে সীমাহীন দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। সরকারি তৃতীয় গ্রেডের কর্মকর্তা হিসেবে তার বেতন ৮০ হাজার টাকার কম হলেও, তিনি ঢাকা ও দেশের অন্যান্য এলাকায় বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
হারুন অর রশীদ তার চাকরির শুরু থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে লিপ্ত ছিলেন। ঘুষ, চাঁদাবাজি, জমি ও ফ্ল্যাট দখল, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি, এবং অর্থ পাচারসহ নানা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ সবকিছুর পরও তিনি নিয়মিতভাবে পদোন্নতি পেয়েছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটগুলোতে দায়িত্ব পালন করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর উত্তরা, গাজীপুর ও কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে ডিআইজি হারুনের সম্পদের পরিমাণ হাজার কোটি টাকারও বেশি। তার সম্পদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো উত্তরা, গাজীপুর ও কিশোরগঞ্জে থাকা বিলাসবহুল রিসোর্ট ও বহু আবাসিক হোটেল। ঢাকায় তার নামে দুই ডজনেরও বেশি আলিশান বাড়ি রয়েছে, যা তার আয়ের সঙ্গে সম্পূর্ণ অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
এছাড়া, হারুনের বিদেশে স্থায়ীভাবে থাকার সুবিধার্থে তার পরিবারের সবার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব রয়েছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্পত্তি দখল ও দেখাশোনার জন্য একটি তিন সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটিও রয়েছে তার।
হারুনের এই বিপুল সম্পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার সম্পর্কে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান মন্তব্য করেন, “একজন পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে তার আয় ও সম্পদের পরিমাণ অসামঞ্জস্যপূর্ণ। দেশে-বিদেশে তার সম্পদের পরিমাণ দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের ফসল।”
অভিযোগের বিষয়ে ডিআইজি হারুন অর রশীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।