ঢাকা, ২৭ মে: একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। মঙ্গলবার (২৭ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই বহুল আলোচিত রায় ঘোষণা করেন।
এই রায়ে দীর্ঘ এক দশকের আইনি লড়াইয়ের অবসান হলো। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, “এই রায়ের মাধ্যমে সত্যের বিজয় হয়েছে, মিথ্যার পরাজয় ঘটেছে। এখন থেকে এটিএম আজহারুল ইসলাম অপরাধমুক্ত।”
তিনি আরও বলেন, “জামায়াত ও বিএনপির ছয় নেতার মৃত্যুদণ্ড ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। কমপক্ষে পাঁচ জন জেলেই মারা গেছেন। এটি ইতিহাসে নজিরবিহীন নির্যাতনের উদাহরণ হয়ে থাকবে।”
২০১২ সালের ২২ আগস্ট রাজধানীর মগবাজারের নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় এটিএম আজহারুল ইসলামকে। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এরপর ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি তিনি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন।
২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে এবং ২০২০ সালের ১৫ মার্চ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। পরে ওই বছরের ১৯ জুলাই রায়ের পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন তিনি। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ মামলাটি পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেয়, যা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রথমবারের মতো রিভিউ পর্যায় থেকে ফের আপিল শুনানির অনুমতি।
এটাই বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা, যেখানে রিভিউয়ের পর আবারও আপিল শুনানির সুযোগ দেওয়া হয়। আজকের রায়ে এটিএম আজহারুল ইসলাম পূর্ণাঙ্গভাবে খালাস পেলেন, যা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারপ্রক্রিয়ায় এক ঐতিহাসিক মোড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।