ঢাকা, ২৪ মে: বিচার, মৌলিক সংস্কার এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ একসঙ্গে ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শনিবার (২৪ মে) দুপুরে দলটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার শুধু একটি নির্বাচনকালীন সরকার নয়, এটি একটি গণঅভ্যুত্থানের ফসল। আমরা আশা করি, এই সরকার জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের বিচার ও মৌলিক রাজনৈতিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ সুগম করবে।”
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সবার উচিত জনগণের আস্থা অর্জনে কাজ করা, বিভ্রান্তি সৃষ্টি নয়।”
সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “সেনাবাহিনীর কাজ হলো দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ নয়। অতীতে যারা ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের তালিকা আগেই প্রকাশ করা উচিত ছিল। তাহলে প্রতিষ্ঠান নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠত না। বর্তমানে সেনাবাহিনী গঠনমূলক ভূমিকা রাখছে, তবে অতীতে ১/১১-র মতো ঘটনাগুলো কারও জন্যই ইতিবাচক ছিল না।”
তিনি আরও বলেন, “যারা গুমের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সেনাবাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থা আরও দৃঢ় হবে।”
দুই ছাত্র উপদেষ্টার প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “তাদের সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। তারা সরকারে থেকে রাজনৈতিক কার্যক্রমে যুক্ত থাকতে পারেন না। তাদের এনসিপির সঙ্গে যুক্ত করে দলটিকে হেয় করার অপপ্রচেষ্টা চলছে।”
নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “নির্বাচন কমিশনকে আস্থার জায়গায় আসতে হবে। না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পন্ন করা প্রয়োজন।”
দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে ১/১১ এর পূর্বাভাস দেখা যাচ্ছে। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে জনমনে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারের সদিচ্ছা ও রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক সহযোগিতা থাকলে ডিসেম্বর থেকে জুন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর হওয়া নিয়ে এনসিপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।”