ধরলে প্রশ্ন, যেতে দিলে বলতেন ছেড়ে দিছে: আইন সবার জন্য সমান, তদন্তেই প্রমাণ হবে
ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে গতকাল রোববার (১৮ মে) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি থাইল্যান্ডে ব্যক্তিগত সফরে যাচ্ছিলেন, এমন সময় ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে। পরে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল। সোমবার (১৯ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন এবং আগামী ২২ মে জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
সোমবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “তার নামে মামলা থাকলে কী করবেন? যদি ছেড়ে দিতাম, তখন বলতেন ছেড়ে দিয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, “ওনার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। নির্দোষ প্রমাণ হলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তারের ঘটনায় সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে বলেন, “নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার বিব্রতকর একটা ঘটনা হয়ে থাকলো আমাদের জন্য। আমাদের সরকারের কাজ জুলাইয়ের প্রকৃত অপরাধীদের বিচার করা।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “এই ধরনের ঢালাও মামলাকে আমরা আরও সংবেদনশীলভাবে হ্যান্ডেল করতে পারবো এই আশা।
নুসরাত ফারিয়ার বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় করা একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ওই মামলায় তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আসামি করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তাকে গ্রেপ্তারের পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, জুলাই গণহত্যায় যারা প্রকৃত অপরাধী তারাই যাতে গ্রেপ্তার হয়, কেউ যেন ভোগান্তির শিকার না হয়—এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “কোনো নিরীহ লোক যেন কোনো অবস্থায়ই শাস্তি ভোগ না করে, এ ব্যবস্থা আমরা নেব।
নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তারের ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, তারকাখ্যাতির কারণে তাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে, কেউ কেউ বলছেন, আইনের চোখে সবাই সমান এবং মামলার ভিত্তিতে গ্রেপ্তার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তারের ঘটনা একটি প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার অংশ হলেও, তারকাখ্যাতির কারণে এটি ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কেউ বিভ্রান্তি ছড়াতে না গিয়ে বাস্তবতা বুঝে বিচার করাই হবে সময়োপযোগী পদক্ষেপ। আইন মেনে চলা যেমন একজন নাগরিকের দায়িত্ব, তেমনি প্রশাসনিক আচরণে সম্মানবোধও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
নুসরাত ফারিয়ার মতো সচেতন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিনিধিত্বকারী শিল্পীদের প্রতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি পেশাদার ও সম্মানজনক আচরণ প্রত্যাশা করে দেশবাসী।