ঢাকা, ১৬ মে: রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহ ব্যবধানে সবজির দামে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কিছু সবজির দাম কিছুটা কমলেও বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে চালের বাজারে এসেছে স্বস্তির বার্তা; বিশেষ করে নতুন বোরো মৌসুমের চালে দেখা দিয়েছে উল্লেখযোগ্য মূল্যহ্রাস। অপরদিকে, মাছের বাজারে তেমন কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, নয়াবাজার ও কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারে ঘুরে দেখা যায়, গ্রীষ্মকালীন সবজি পুরোদমে বাজারে আসতে না পারায় সরবরাহে ভিন্নতা তৈরি হয়েছে। এর ফলে কিছু সবজির দাম বাড়লেও কিছু সবজির দাম কিছুটা কমেছে।
কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা আনিস বলেন, “গ্রীষ্মকালীন সবজি এখনো পুরোপুরি বাজারে ওঠেনি, তাই কিছু সবজির দাম বেশি।”
বর্তমানে বাজারে সবজির দাম প্রতি কেজি হিসেবে নিচের মতো:
করলা: ৫০ টাকা
বেগুন: ৬০-৮০ টাকা
বরবটি: ৫০ টাকা
কাঁকরোল: ৬০ টাকা
ঢেঁড়শ ও কচি লাউ: ৪০ টাকা
ঝিঙে: ৩০ টাকা
পেঁপে: ৭০ টাকা
গাজর: ৪০ টাকা
শসা: ৫০ টাকা
পটোল: ৩০ টাকা
সজনে ডাটা: ৮০ টাকা
চালকুমড়া ও লাউ (প্রতি পিস): ৪০-৬০ টাকা
উল্লেখযোগ্যভাবে দাম কমেছে কাঁচা মরিচের। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, যেখানে পাইকারি দরে তা ৪০-৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া, ধনেপাতার দাম নেমে এসেছে ৬০-৭০ টাকায়।
নতুন বোরো মৌসুমের চাল বাজারে আসায় দাম কমতে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, নতুন মিনিকেট চালে প্রতি কেজিতে কমেছে ৮ টাকা পর্যন্ত। মাঝারি ও মোটা চালেও দেখা গেছে ৩ টাকার মতো হ্রাস।
বর্তমান চালের দাম (প্রতি কেজি):
নতুন মিনিকেট: ৭০-৭৪ টাকা
নতুন আটাইশ: ৫৬ টাকা
পুরাতন মিনিকেট: ৮৬-৯০ টাকা
পুরাতন আটাইশ: ৫৮-৬২ টাকা
স্বর্ণা: ৫৫ টাকা
নাজিরশাইল: ৭৬-৮৮ টাকা
পোলাও চাল: ১১৬-১১৮ টাকা
চাল ব্যবসায়ী রাকিব জানান, “নতুন চাল বাজারে আসায় স্বাভাবিকভাবেই দাম কমেছে। তবে পুরোনো চালে এখনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসেনি।”
অপরদিকে, মাছের বাজারে বড় কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। এখনও আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ মাছ।
বর্তমান মাছের দাম (প্রতি কেজি):
রুই: ৩৫০-৪২০ টাকা
কাতল: ৩৮০-৪৫০ টাকা
চাষের শিং: ৫৫০ টাকা
মাগুর: ৫০০ টাকা
কৈ: ২০০-২৫০ টাকা
পাঙাশ: ১৮০-২৩০ টাকা
তেলাপিয়া: ১৫০-২২০ টাকা
কোরাল: ৭৫০ টাকা
বোয়াল: ৭৫০-৮৫০ টাকা
আইড়: ৮০০-৯০০ টাকা
টেংরা: ৬৫০-৭০০ টাকা
দেশি কৈ: ১৩০০-১৭০০ টাকা
দেশি শিং: ১৪০০-১৫০০ টাকা
ভোক্তাদের অভিযোগ ও দাবি
বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, অনেক ক্রেতা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। তাদের দাবি, আবহাওয়া পরিবর্তনের অজুহাতে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে দেন।
ক্রেতা ফরিদ হক বলেন, “একটু গরম বা বৃষ্টি হলেই ব্যবসায়ীরা শাক-সবজির দাম বাড়িয়ে দেন। এটা শুধু বেশি মুনাফার কৌশল।”
তিনি আরও বলেন, “এমন অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”