গাজা, ১৬ মে ২০২৫: গাজার বিপর্যস্ত উপত্যকার প্রায় ৩৫ শতাংশ এলাকা বর্তমানে ইসরাইলি বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সাম্প্রতিক উপগ্রহ চিত্র এবং মাঠপর্যায়ের তথ্য বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, গাজার পূর্ব ও দক্ষিণ অংশে দুই কিলোমিটারেরও বেশি প্রশস্ত ‘বাফার জোন’ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে ইসরাইল। বিশেষজ্ঞরা এটিকে ইসরাইলি দখলদারির একটি সুপরিকল্পিত কৌশল বলে অভিহিত করছেন।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল টুয়েলভের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নেতানিয়াহু প্রশাসন গাজার অভ্যন্তরে সামরিক অবকাঠামো গড়ে তুলে সীমান্তের আকার পরিবর্তন করছে। ফিলাডেলফি করিডোর থেকে মরাগ এক্সিস পর্যন্ত পুরো রাফাহ শহর এখন ইসরাইলি বাহিনীর ‘অপারেশনাল কন্ট্রোলে’ রয়েছে। কেবলমাত্র ‘জেনেইনা’ নামের একটি ছোট এলাকা এখনও ফিলিস্তিনিদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বেন গুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়াকভ গার্ব স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন, গাজা জুড়ে ইতিমধ্যে ১৫টি বড় সামরিক পোস্ট তৈরি করেছে ইসরাইল। এছাড়া আরও ৫টি নতুন সামরিক করিডর নির্মাণাধীন রয়েছে। গাজা সিটির শাজাইয়া ও তুফাহ এলাকাসহ উত্তরের বেইত হানুন ও বেইত লাহিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলেও বর্তমানে ইসরাইলি সেনা মোতায়েন রয়েছে।
এই সামরিক উপস্থিতি ইঙ্গিত দেয়, ইসরাইল ধাপে ধাপে গাজার বিস্তীর্ণ অংশ দখলে নিচ্ছে এবং এই প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ঘটছে বলে অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
ইসরাইলি বিমান, ট্যাংক ও যুদ্ধজাহাজের মাধ্যমে গাজা উপত্যকায় প্রতিনিয়ত ভয়াবহ হামলা চলছে। শুক্রবার (১৬ মে) সকাল থেকে শুরু হওয়া হামলায় এখন পর্যন্ত শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর একদিন আগেই, বৃহস্পতিবার (১৫ মে) নাকবা দিবসে চালানো বোমা হামলায় নারী ও শিশুসহ ১৪৩ জন নিহত হন। আহত হন আরও অনেকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠাতে নতুন একটি ফাউন্ডেশন কাজ শুরু করলেও নিরপেক্ষতা বজায় না রাখায় এতে অংশ নিচ্ছে না জাতিসংঘ। ফিলিস্তিনি সূত্রমতে, এই সহায়তার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য লুকিয়ে থাকতে পারে।
অন্যদিকে, হামাসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ হলে তাঁরা সকল জিম্মিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত। তবে এই শর্তাবলি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।